উপকূলের ক্যাম্পাসে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে অতিথি পাখি


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৫০ অপরাহ্ন, ১২ই ডিসেম্বর ২০২৪


উপকূলের ক্যাম্পাসে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে অতিথি পাখি
ছবি: প্রতিনিধি

অতিথি পাখি বদলে দিয়েছে উপকূলের বিদ্যাপীঠ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসের চিত্র। প্রকৃতিতে এখন শীত চললেও অতিথি পাখিদের কলরবে ক্যাম্পাস জুড়ে যেন বসন্তের আমেজ। 


শীতের শুরুতেই ক্যাম্পাসে আগমন ঘটে অতিথি পাখির। আর শীত বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসের অতিথি পাখির আগমন বাড়িয়ে দিয়েছে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে ময়না দ্বীপ যেন সৌন্দর্য উপভোগের তীর্থস্থান।


আরও পড়ুন: এবছরও গুচ্ছেই থাকছে নোবিপ্রবি


চারিদিকে পাখির কলকাকলি। কখনো মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানো আবার কখনো দলবেঁধে পানিতে জলকেলিতে মত্ত থাকা এসব অতিথি পাখি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমী শিক্ষার্থীরা। কেউবা ছবি তুলছেন আবার কেউবা ভিডিও ফুটেজ নিয়ে শেয়ার করছেন সামাজিক মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এমন দৃশ্য এখন বলা চলে নিত্যদিনের।


অতিথি পাখির কলকাকলি উপভোগ করতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ শিক্ষার্থীরাই শুধু নয়, আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সৌন্দর্যপ্রেমীরা এখানে আসেন। ময়না দ্বীপের পাশে শান্তিনিকেতনে শিক্ষার্থীদের গানের আসর বসে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ সে গানের আসরকে করে আরো প্রাণবন্ত। ব্যস্ত ক্যাম্পাস জীবনের মাঝে একট বিরাম পেতে প্রতিদিনই হাজির হয় শত শত শিক্ষার্থী।



বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ময়না দ্বীপের জমি ইজারা দেয়ার ফলে বিগত বছরগুলোতে সেখানে পানি সেচ দিয়ে করা হতো চাষাবাদ। ফলে কিছুদিন থেকে আবার ফিরে যেতে হতো এসব অতিথি পাখিদের। তবে এবার এর ব্যতিক্রম। এবার ময়না দ্বীপে চাষাবাদ না করায় এখনও নির্ভয়ে দিন অতিবাহিত করছে চলতি মৌসুমে আসা অতিথি পাখিরা।



অতিথি পাখির কলকাকলি উপভোগ করতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ শিক্ষার্থীরাই শুধু নয়, আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সৌন্দর্যপ্রেমীরা এখানে আসেন। ময়না দ্বীপের পাশে শান্তিনিকেতনে শিক্ষার্থীদের গানের আসর বসে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ সে গানের আসরকে করে আরো প্রাণবন্ত। ব্যস্ত ক্যাম্পাস জীবনের মাঝে একট বিরাম পেতে প্রতিদিনই হাজির হয় শত শত শিক্ষার্থী।



বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী সামিয়া সুলতানা বলেন, মনে প্রশান্তি এনে দেয় নোবিপ্রবিতে আগত অতিথি পাখি। প্রকৃতির মাঝে বিলীন হতে আমার সবসময়ই ভালো লাগে, মানসিক শান্তি অনুভব হয়। সারাদিনের সিটি ,এসাইনমেন্ট,  ক্লাস শেষ হলে মানসিক শান্তির খুঁজে শান্তিনিকেতন, মনোসারণি বা কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ের পাশের মাঠে একা বসে থাকি তখন অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দ, উড়ে বেড়ানো সবকিছু মনে অদ্ভুত শান্তি এনে দেয়।



প্রতিবছর শীত এলেই নোবিপ্রবির ময়না দ্বীপে অতিথি পাখিরা ভিড় জমায়। এ বছরও আগমন ঘটেছে অতিথি পাখিদের। কুয়াশা জড়ানো সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ময়না দ্বীপের পানিতে কচুরিপানা ফুলের ভিড়ে বিচরণ শুরু হয় অতিথি পাখিদের। দল বেঁধে পাখিদের উড়ে বেড়ানো আর খাবার সংগ্রহের দৃশ্য সত্যিই অতুলনীয়। ময়না দ্বীপকে পাখিদের স্থায়ী অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে নোবিপ্রবির সৌন্দর্য বাড়বে , পাখিদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।



আরেক শিক্ষার্থী ইসমাত জাহান বলেন, আমার কাছে নোবিপ্রবির সৌন্দর্য মানে তিনটি জিনিস। শরতের কাশফুল, শীতের অতিথি পাখি আর সূর্যমুখী ফুল। অতিথি পাখি নোবিপ্রবির জন্য আর্শীবাদস্বরূপ।




সারাদিনের ক্লাসের প্যারা শেষে মনোসারণি কিংবা শান্তিনিকেতনের টংয়ে বসে যখন অতিথি পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ শুনি তখন মনে প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যায়। ময়না দ্বীপ জুড়েই তাদের রাজত্ব। চারদিকে ফুটে থাকা নানা রঙের ফুলের ভিড়ে এই পাখিরা যেনো ১০১ একরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।


আরও পড়ুন: বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে নোবিপ্রবি শিক্ষকের প্রতারণা



বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল  বলেন, গত বছর ময়না দ্বীপকে ধান চাষের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর লিজ বাতিল করি। যেহেতু পরিযায়ী আমাদের অতিথি তাই তাদের নিরাপদ আবাসস্থলের জন্য আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা ময়না দ্বীপকে অভয়ারণ্যে ঘোষণার পাশাপাশি একটা প্রকল্প পরিবেশ উপদেষ্টা স্যারের কাছে প্রেরণ করেছি। আমরা মনে করি পরিযায়ী পাখি যদি আমাদের এই অঞ্চলে নিরাপদ মনে করে তাহলে তারা আগামীতে মেঘনার অববাহিকায় আসবে। এতে করে পরিবেশের সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। কেউ যেন পাখি শিকার না করে, তাদের ঢিল ছুড়ে না মারে এবং তাদের বিরক্ত না করে সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।


এসডি/