আধিপত্যবাদ বিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চের বিবৃতি
মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার নিশ্চিতে তিন দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৬ অপরাহ্ন, ২৮শে এপ্রিল ২০২৫

রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, সামাজিক সহনশীলতা ও জননিরাপত্তার উন্নতির স্বার্থেই মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা জরুরী দাবি জানিয়েছে আধিপত্যবাদ বিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চ।
আরও পড়ুন: হজ অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
সোমবার (২৮ এপ্রিল) আধিপত্যবাদ বিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চ’র পক্ষে সৈয়দ মুহাম্মদ হাসান আল আযহারী, সৈয়দ সাইফুল ইসলাম বারী, শফিক আল মোজাদ্দেদী ও ইমরান হুসাইন তুষার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান।
আধিপত্যবাদ বিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চের নেতৃবৃন্দ জানায়, গত রবিবার, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ৩৯ নং ওয়ার্ড হায়দারাবাদ এলাকার আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা রঈস উদ্দিনকে মতাদর্শগত বিরোধের জের ধরে স্থানীয় একটি গ্রুপ মব তৈরি করে এবং তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। সম্পূর্ন বে-আইনিভাবে স্থানীয় মসজিদের একজন ইমামকে ঘন্টার পর ঘন্টা গাছের সাথে বেঁধে এলোপাথাড়ি আঘাত করা, গণসহিংসতা করে জোরপূর্বক মিথ্যা স্টেটমেন্ট নেওয়া এবং কোনোরূপ চিকিৎসা ছাড়াই পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা একটি নজিরবিহীন জুলুমের ঘটনা। নির্মম নির্যাতনের পর সকাল ১০টায় তাঁকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয় এবং পুলিশ বিনা চিকিৎসায় তাঁকে থানায় আটকে রাখে। বিকাল ৩টায় তাঁকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। অতঃপর কারাগারেই রাত ৩ ঘটিকায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
তারা জানান, এই নির্মম হত্যার সাথে স্থানীয় গ্রুপ যারা মব তৈরি করেছে নির্যাতন চালিয়েছে একটি পক্ষ এবং পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষ, যারা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার চিকিৎসা থেকে তাঁকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত করেছে। যদি পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষ থেকে যথাসময়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করা হতো তাহলে হয়তো আজকে এমন নির্মম হত্যার মুখোমুখি হতে হতো না। স্বৈরাচার পতনের পর পুলিশী ব্যবস্থার যে আমূল পরিবর্তন আমরা চেয়েছিলাম তার উল্লেখযোগ্য বাস্তবায়ন হয়নি বলেই আজকে মব ভায়োলেন্সে নাগরিকের প্রাণহানির সাথে পুলিশের পেশাদারিত্বের অভাবজনিত যোগাযোগ দেখা যাচ্ছে। আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৩ দাবিঃ
১. যারা মব তৈরি করেছে এবং অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে প্রক্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।
২. একজন নাগরিককে মব দ্বারা নির্যাতন, নির্যাতন পরবর্তী চিকিৎসাহীন অবস্থায় থানায় আটকে রাখা।
এবং কারাগারে প্রেরণের সাথে জড়িত সকল পুলিশ সদস্যকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩. মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হবে।
আরও পড়ুন: সরানো হলো আরও এক উপদেষ্টার একান্ত সচিবকে
স্বৈরাচার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৮ মাস পার হওয়ার পরও এমন ভয়াবহ মব তৈরি এবং অমানবিক পুলিশী ব্যবস্থায় নাগরিকের মৃত্যু কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এটা স্পষ্টই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দায় সরকারকেই নিতে হবে। জরুরী ভিত্তিতে এই হত্যার তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাচ্ছি। যদি অনতিবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার, তদন্ত ও বিচারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে। আমরা আইন লঙ্ঘনের বিরোধী। আশা করছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অনতিবিলম্বে এই হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার, তদন্ত ও বিচারের ব্যাপারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এসডি/