পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য আমরা আসামি : ড. মুহাম্মদ ইউনূস


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:০৮ অপরাহ্ন, ২৫শে জুন ২০২৫


পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য আমরা আসামি : ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ফাইল ছবি।

পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য যারা দায়ী তারা আমরা সবাই এখানে হাজির। আমরা আসামি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।


বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস এবং পরিবেশ ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 


আরও পড়ুন: পিলখানা হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক নেতাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে: স্বাধীন তদন্ত কমিশন


প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের পুরোনো কবিরা বলে গেছেন, সাগরের সব পানি যদি কালি হত, বনের সব গাছ যদি কলম হতো, তাহলে এই অপরাধের বর্ণনা শেষ করা যেত না। একই অপরাধ আমরা করে যাচ্ছি প্রতিদিন।


তিনি বলেন, আজকের পৃথিবী বিভিন্ন ধরনের সংকটে জড়িত। যুদ্ধবিগ্রহ, প্রযুক্তির অপব্যবহার আমাদের সামনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু যে চ্যালেঞ্জটা আমরা এখনো অনেকে উপলব্ধি করতে পারছি না, সেটা হলো প্রকৃতির বিধ্বংসী-রূপ। এটা প্রকৃতির দোষ না, আমাদের দোষ। আমরা মানুষ যারা এখানে বসবাস করি, প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কথা। কিন্তু তাল মিলিয়ে না চলে উল্টো পথে চলি। দোষটা প্রকৃতির না, দোষটা হলো প্রকৃতি-বিধ্বংসী এক জীব, যার নাম মানুষ। 


প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের সামনে দৈত্যাকারে হাজির হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জলবায়ু সংকট। সে ক্রমাগত হুঙ্কার দিচ্ছে, হয় আমরা থাকবো, না হয় তোমরা থাকবে। দুইজন একসঙ্গে থাকতে পারবে না।



তিনি বলেন, প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাক না থাকায়, পৃথিবীর জলাশয়গুলো পলিথিন ও প্লাস্টিকে ছেয়ে গেছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়ছে। প্লাস্টিক এমন এক জিনিস, যার জন্ম আছে মৃত্যু নেই। পৃথিবীর সব কিছুর মৃত্যু আছে, তার মৃত্যু নেই। এসব ক্রমাগত বাড়ে, ফলে তা সবকিছু জয় করে ফেলে। আমরা দিবস উদযাপন করে ঘরে ফিরে যাব, যথারীতি প্লাস্টিক ব্যবহার করব।


আরও পড়ুন: একনেকে ৮৯৭৪ কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন দিলো সরকার


প্রধান উপদেষ্টা  বলেন,প্লাস্টিকের ব্যবহার পৃথিবীতে তিন ধরনের সংকট বাড়িয়ে দিয়েছে। জলবায়ুগত সংকট, প্রকৃতিগত সংকট, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি। এটা শুধু প্লাস্টিকের জন্য। আরো বহু জিনিস আছে। প্লাস্টিক ক্রমাগত হুঙ্কার দিচ্ছে, হয় আমরা থাকবো, না হয় তোমরা থাকবে। দুইজন একসঙ্গে থাকতে পারবে না। তাদের জয়যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে আর আমাদের অসহায়ত্ব দেখছে। আমাদের উদ্যোগের অভাব দেখছে। আমরা সব জয় করে নিলাম তোমরা কিছুই করতে পারলে না। এই অসহায়ত্বের মধ্যে আমরা ২০২৫ সালে এই দিবস পালন করছি।


আমরা যদি আমাদের লাইফস্টাইল পরিবর্তন না করি, এই যুদ্ধে সামগ্রিকভাবে মানুষের পরাজয় অবধারিত। সেজন্য এর থেকে কীভাবে আমরা বের হবো সেটা হলো আজকের আলোচ্য বিষয়, বলেন প্রধান উপদেষ্টা।


এসডি/