‘তারেক রহমানকে নিয়ে অশ্লীল-অশ্রাব্য স্লোগানের পরিণতি ভালো হবে না’


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৫৫ অপরাহ্ন, ১২ই জুলাই ২০২৫


‘তারেক রহমানকে নিয়ে অশ্লীল-অশ্রাব্য স্লোগানের পরিণতি ভালো হবে না’
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, তারেক রহমানকে নিয়ে যে অশ্লীল অশ্রাব্য স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, তার পরিণতি ভালো হবে না।


শনিবার (১২ জুলাই) সকালে এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।


পোস্টে তিনি লেখেন, যারা টিনের চালে কাউয়া তারেক রহমান..., ১২৩৪ তারেক রহমানের পু... মার, চাঁদা দেই পল্টনে, চলে যায় লন্ডনে, চাঁদা লাগলে চাঁদা নে, আমার ভাইয়ের জীবন দে ইত্যাদি স্লোগানে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজপথ কাঁপাচ্ছেন, তাদের নেতাদেরকে নিয়ে যদি ছাত্রদল যুবদল অনুরূপ স্লোগান দেয় তবে রাজনীতি কেবল স্লোগানে আবদ্ধ থাকবে না।


তিনি আরও বলেন, খুর, চাপাতি, রামদা, রগকাটা, কাঁটা বন্দুক, গুলি, বোমার অতীত ইতিহাস থেকে একে ৪৭ স্নাইপারের নয়া ঝন ঝনানী শুরু হবে। আর তাতে করে সব চেয়ে খুশি হবে তারা যারা দেশটাকে জঙ্গি বানিয়ে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষীবাহিনী পাঠাতে চায়!


আরও পড়ুন: রাজধানীর মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ড ‘পৈশাচিক’: মির্জা ফখরুল


এর আগেও রাজনীতি নিয়ে বেশ চটকদার কথা বলেছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক বিশ্লেষণে গোলাম মাওলা রনি বলেন, জুলাই বিপ্লব ভণ্ডুল করার চক্রান্ত করে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ।


স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ইতিহাসের একটি মাইলফলক। বাংলাদেশের অতীত ইতিহাসে কখনও এত বড় বিপ্লব বা গণ-অভ্যুত্থান হয়নি। কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর নেতৃত্ব কিংবা কোনো পক্ষের ইন্ধন ছাড়াই মানুষ রাস্তায় নেমে এসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৭ বছরের একটি শাসনব্যবস্থাকে বদলে দিল। এমন ঘটনা বাংলাদেশে আগে ঘটেনি; ভারত-পাকিস্তানেও ঘটেনি। এমনকি শ্রীলঙ্কার অভ্যুত্থানও এ রকম ছিল না।


তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম একজন সরকারপ্রধান দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হলেন। এরপর আমরা ভেবেছিলাম, এবার কিছু একটা হবে। কিন্তু দেখছি সব কিছু তছনছ হয়ে গেছে। নতুন একশ্রেণির দুর্বৃত্ত পয়দা হয়েছে। এমন কিছু অপরাধ বেড়ে গেছে যে অপরাধগুলো আমরা আগে কল্পনাও করিনি।


তিনি আরও বলেন, এর ফলে জুলাই-আগস্টের পরাজিত গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কৌশলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারা মিছিল করছে, মিটিং করছে; বিভিন্ন রকম তথ্য দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছে। তারা বলছে, তারা আবার বাংলাদেশে আসবে। তারা বলছে, তাদের বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনার হাতেই কেবল বাংলাদেশ নিরাপদ।


আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় বিএনপির ওপর দায় চাপানো অপরাজনীতি: সালাহউদ্দিন


সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, তাদের যেসব নেতা ৩-৪ মাস লজ্জায় মুখ দেখান নাই, তারা সবাই এখন দেশের বাইরে থেকে জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। তারা বর্তমান সরকার, গণ-অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে মবোক্রেসি তৈরি করছেন। তারা এমন সব ন্যারেটিভ প্রচার করছেন যা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা বিএনপির নেই, সরকারেরও নেই।


তার এসব বক্তব্যের বিরোধীতা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছেন।


শুক্রবার (০৪ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে 


শফিকুল আলম লেখেন, গোলাম মাওলা রনি এখন আমাদের টিভি টকশো ও ইউটিউব ভিডিওগুলোর মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির অন্যতম প্রধান উৎস হয়ে উঠেছেন।


তিনি লিখেন, সম্প্রতি সময় টিভির এক টকশোতে রনি দাবি করেছেন যে, নূর হোসেন-স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি শহীদ নাকি জনতার হাতে নিহত হয়েছেন। কিন্তু, আমরা সবাই জানি, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর জেনারেল এরশাদের নিরাপত্তা বাহিনীই গুলি করে হত্যা করেছিল নূর হোসেনকে। রনি কি এখন ইতিহাস থেকে এরশাদের অপরাধ মুছে ফেলার দায়িত্ব নিয়েছেন?


আরও পড়ুন: আ. লীগের খুনের দায় হাসিনার ওপর বর্তায়, তেমনি বিএনপির দায় আপনার ঘাড়ে


টকশোতে গোলাম মাওলা রনির মিথ্যাচারে উপাস্থাপক কোনো প্রতিবাদ করেননি দাবি করে প্রেস সচিব বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো, সময় টিভির সেই অনুষ্ঠানে উপস্থাপক এই নির্লজ্জ মিথ্যাচারের কোনো প্রতিবাদও করেননি। যখন আপনি মিথ্যাবাদী ও বিভ্রান্তিকর কণ্ঠকে প্ল্যাটফর্ম দেন, তখন আপনি নিজেও সেই অপরাধের অংশীদার হয়ে ওঠেন।


এমএল/