সুষ্ঠু রাকসু নির্বাচনের জন্য ১০ প্রস্তাবনা সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০৮ পিএম, ১৯শে আগস্ট ২০২৫


সুষ্ঠু রাকসু নির্বাচনের জন্য ১০ প্রস্তাবনা সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর
ছবি: প্রতিনিধি

অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাকসু নির্বাচন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১০ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ক্রিয়াশীল সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠনসমূহের একাংশ।


মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব প্রস্থাবনা তুলে ধরেন তারা।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন উত্তরণ লেখক ও পাঠকের সূতিকাগারের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আফরিন জাহান।


তিনি বলেন, আসন্ন রাকসু নির্বাচন দীর্ঘদিনের আন্দোলনের একটি ফল। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত শিক্ষার্থীদের প্রাণের রাকসু নির্বাচন অবশেষে আলোর মুখ দেখছে। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমরা এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা নিয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছি না।


আশ্বস্ত হতে না পারার কারণ বিষয়ে তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বেশকিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কোনোরূপ সুষ্ঠু সমাধান এখনও পাইনি। তন্মধ্যে হলগুলোতে কুরআন পোড়ানো ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্যারের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণ উল্লেখযোগ্য। 


এছাড়াও জুলাই আন্দোলনে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকা ও মদদদাতা ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনীব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সঙ্গত কারণেই এই প্রশাসনের অধীনে রাকসু নির্বাচনের নিরপেক্ষতা, সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে আমরা মোটেও শঙ্কামুক্ত নই।


তিনি আরও বলেন, নির্বাচন যাতে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাকসু নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অপরিহার্য। কোনো বিশেষ ব্যক্তি, সংগঠন বা প্যানেল নয় বরং সকল প্যানেল, প্রার্থী ও ভোটারের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের মধ্যদিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ রাকসু নির্বাচন বাস্তবায়ন করা বর্তমান প্রশাসনের গুরুদায়িত্ব বলেই বিবেচিত। 


প্রস্তাবনাগুলো হলো- ভোটকেন্দ্র আবাসিক হল থেকে প্রত্যাহার করে একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর, সকল ভোটকেন্দ্রকে সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় আনা এবং কেন্দ্রসমূহে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করা, নারী প্রার্থীরা যাতে অনলাইন-অফলাইনে বুলিং ও হ্যারেসমেন্টের শিকার না হয় সেজন্য কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণপূর্বক মনিটরিং সেল গঠন করা, সকল প্রার্থী ও সংগঠনের জন্য হল ও ক্যাম্পাসে সহবস্থান নিশ্চিত করা, সকল প্রার্থী ও প্যানেলের নির্বাচনী প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা এবং প্রার্থীদের পোস্টার, ফেস্টুনের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনরূপ সহিংসতা না হয় সেজন্য সকল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে পরিবেশ পরিষদ গঠন করা।


নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য শিক্ষক, সিনিয়র সিটিজেনদের নিয়ে নির্বাচন পরিদর্শক টিম গঠন করা, ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠি যাতে প্যানেল কিংবা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ অথবা ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা, আইবিএ-এর শিক্ষার্থী ও বিদেশী শিক্ষার্থীদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রার্থীর ব্যাংক একাউন্ট ও আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করা এবং সেইসঙ্গে নির্বাচনী খরচের জন্য যেকোনো উৎস হতে প্রাপ্ত সকল অর্থ প্রাপ্তির প্রমাণসহ ও উক্ত অর্থের প্রত্যেক উৎসের নাম উল্লেখ করে বিবরণী দেওয়া।


সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রীন ভয়েসের ছাত্র উপদেষ্টা আহসান হাবীব, রাবি সাহিত্য সংসদের সংগঠক মাহাইর ইসলাম ও গোপাল রায়, মুক্তালাপের সংগঠক মাহফুজ ইসলাম নয়ন, উত্তরণ লেখক ও পাঠকের সূতিকাগার ও রাবি শাখার অর্থ সম্পাদক ইমাম হোসেন।

এসএ/