বিএনপি'র শাসনামলে ১৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিল: কাদের
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
‘দেশবাসী ভুলে যায়নি বিএনপি-জামাত অশুভ জোট শাসনামলে বিবিসির সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালুসহ ১৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিল। ওই সময়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫০০টিরও বেশি মামলা এবং ৮০০ হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এমনকি ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল ৪-এর সাংবাদিক লিওপোল্ড ব্রুনো সরেন্তিনো, জেইবা মালিকসহ কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। এমনকি জঙ্গি হামলার ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অনেক সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছিল। যার কারণে ‘রিপোর্টার উইদাউট বর্ডারস’ বিএনপি’র শাসনামলে বাংলাদেশকে সাংবাদিকদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছিল।’
সোমবার (২৩ মে) এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চিরাচরিত মিথ্যাচার ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশ সাংবাদিকদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল। এখন বিএনপির মহাসচিবের মুখে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা ‘ভূতের মুখে রাম নাম’ ছাড়া আর কিছু নয়।’
বিএনপির মহাসচিব গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘অথচ প্রতিদিন গণমাধ্যমে বিএনপিনেতাদের মিথ্যাচারের সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। বিএনপিনেতাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার ও অপপ্রচার প্রতিদিন গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত হচ্ছে।’
‘রাজনৈতিক ব্যর্থতার ভারে ন্যুব্জ বিএনপির কাছে স্বাধীনতার অর্থ কী, তা দেশবাসী জানে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বন্দুকের নলের মুখে গণমাধ্যমকর্মীদের জিম্মি করে রেডিও-টেলিভিশনে ভাষণে নিজেকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে অসাংবিধানিক পন্থায় রাষ্ট্র ক্ষমতাদখলকারী স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিনেতাদের মুখে গণমাধ্যমে স্বাধীনতার কথা মানায় না।’
‘বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের দুর্নীতি এবং এতিমের অর্থ আত্মসাতের দায়ে আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় বিএনপি এখন দেউলিয়া ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জনবিচ্ছিন্ন বিএনপির একমাত্র অস্ত্রই হলো মিথ্যাচার ও গুজব’, যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “আমরা মির্জা ফখরুল ইসলামদের মর্মবেদনা বুঝি। আজকে তারা বাক্স্বাধীনতার কথা বলেন! স্বাধীনতা তাদেরই থাকে, যারা দায়িত্বশীল নিয়মসিদ্ধ আচরণ করে এবং স্বীয় কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকে। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো এবং জাতীয় ঐক্যের মূল ভিত্তি ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ বিকৃত করে বিএনপি সব সময় বাক্স্বাধীনতার অপব্যবহার করে আসছে। বিএনপিনেতাদের কাছে যদি প্রশ্ন করি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে এ দেশে গণমাধ্যমের বিকাশ, উৎকর্ষ সাধন এবং সাংবাদিকদের কল্যাণ ও স্বার্থ সংরক্ষণে কী করেছে? বরং তারা গণমাধ্যমের বিকাশ রোধে এবং সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। দেশবাসী যা ভুলে যায়নি। গণমাধ্যম নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতাবিরোধী নতুন ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। আমরা বিএনপিনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের পথ পরিহার করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থা রেখে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন। আপনারা ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথ প্রতিবন্ধকতা মুক্ত হবে। অন্যথায় আপনাদের মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসরমান বাংলাদেশের উন্নয়ন-অভিযাত্রা এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’
এসএ/