২০২৬ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়বে ৫ শতাংশে: এডিবির প্রতিবেদন

বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরের শেষে প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৪ শতাংশে, আর ২০২৬ অর্থবছরের শেষে তা বেড়ে পৌঁছাবে ৫ শতাংশে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও)-এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়, পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঘন ঘন বন্যা, শ্রমবিরোধ এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে চাপে রয়েছে। এর ফলে দেশীয় চাহিদা হ্রাস পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এডিবি জানায়, ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন, বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো প্রকট হয়নি, তবে ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাণিজ্য অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা এবং নীতিগত স্থিতিস্থাপকতার অভাব প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুত এগিয়ে নেওয়া জরুরি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতা কম থাকা, সরবরাহ শৃঙ্খলের সীমাবদ্ধতা, পর্যাপ্ত বাজার তথ্যের অভাব এবং মুদ্রার দুর্বলতার কারণে মুদ্রাস্ফীতি ২০২৫ অর্থবছরে বেড়ে ১০ শতাংশে পৌঁছাবে, যা ২০২৪ অর্থবছরের ৯.৭৭ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে বাণিজ্য ঘাটতি সংকোচন এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে চলতি হিসাবে ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপির ০.০৩ শতাংশ উদ্বৃত্ত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: দেশের বাজারে আবারও বাড়ল সোনার দাম
২০২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি হবে ভোগ বৃদ্ধি, যেখানে শক্তিশালী রেমিট্যান্স এবং নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে কঠোর আর্থিক নীতি ও বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাবের কারণে বিনিয়োগ কিছুটা কমতে পারে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্ক বৃদ্ধি বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় রপ্তানিকারকরা পণ্যের দাম কমাতে বাধ্য হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এডিবি।
১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ৬৯টি। সংস্থাটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কাজ করছে।