Logo

পেঁয়াজ বাজারে অস্থিরতা

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:২২
98Shares
পেঁয়াজ বাজারে অস্থিরতা
ছবি: সংগৃহীত

দেশে পেঁয়াজের বাজারে ফের অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচ–ছয় দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজির দাম বেড়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। রাজধানীর বাজারগুলোতে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫–১২০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে; তবে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন—এটি পরিকল্পিত সিন্ডিকেটের কারসাজি।

বিজ্ঞাপন

আমদানিকারকদের ভাষ্য, কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে সদ্য রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সরবরাহ কম। তারা দাবি করেন, সরকার আমদানির অনুমতি দিলেই দুই দিনের মধ্যে দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানাচ্ছে, দেশে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত আছে—এই মুহূর্তে আমদানির প্রয়োজন নেই। এখন আমদানি খুলে দিলে কৃষকরা বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সরকারকে আমদানির অনুমতি দিতে বাধ্য করতেই সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভোক্তারা যুক্তি দিচ্ছেন—কৃষকের ঘরে নয়, পেঁয়াজ মজুতদারদের গুদামেই আটকে আছে; প্রতিবছর এই সময় একই কৌশলে দাম বাড়ানো হয়। তারা সরকারের কঠোর নজরদারি দাবি করেছেন।

সরবরাহ ঠিক, তারপরও দাম বাড়ছে

টিসিবি’র তথ্যমতে, এক মাসে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৫২ শতাংশ। তবে গত বছরের তুলনায় এখনও ২২ শতাংশ কম। রাজধানীর মালিবাগ, কারওয়ান বাজার ও আগারগাঁও—সব জায়গাতেই একই দাম।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে আমদানিকারকরা বলছেন, দেশে দৈনিক চাহিদা ৬–৭ হাজার টন; চাষির গুদামে পেঁয়াজ নেই বললেই চলে। নতুন পেঁয়াজ আসতে দেড়–দুই মাস লাগবে। তাই আমদানির বিকল্প নেই।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বছরে ২৫–২৭ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ৩৫–৩৭ লাখ টন হলেও ২৫% নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিবছর ৬–৭ লাখ টন আমদানি করতে হয়। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে চাপ বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।

বিজ্ঞাপন

ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, দাম বাড়ায় মানুষ কম কিনছে—তাই সরবরাহ ঘাটতি টের পাওয়া যাচ্ছে না।

আমদানি অনুমতি বন্ধ, চাপ বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেট

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনই আমদানি খুলে দিলে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের দাম কমে কৃষক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এদিকে আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) না পেয়ে বন্দরে আটকে আছে ব্যবসায়ীদের আনা পেঁয়াজ।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানাচ্ছে, ভারত থেকে প্রতি কেজি ২০ রুপিতে কেনা পেঁয়াজ কাগজে ৩০ রুপি দেখিয়ে টাকা পাচারও করছে কিছু ব্যবসায়ী। হাইকোর্টে আইপি বিষয়ে করা ১৪টি রিট খারিজ হয়েছে।

ভোক্তা সংগঠন ক্যাব বলছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় নিত্যপণ্যের তদারকি কমেছে—ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছেন। ডিসেম্বরেই নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে, তাই দাম বাড়ার যুক্তি নেই।

বিজ্ঞাপন

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও বলছে, এটি সিন্ডিকেটের কারসাজি ছাড়া কিছু নয়—বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।

কৃষকদের দাবি: আমদানি বন্ধ থাকুক

গত বছর ন্যায্য দাম না পেয়ে কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এবার ভালো ফলন হওয়ায় তারা দাম পাওয়ার আশায় আছেন। পাবনার কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কেজিতে অন্তত ৪০ টাকা—ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকলে তারা টিকতে পারবেন না।

বিজ্ঞাপন

কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, কৃষক ও ভোক্তা—উভয়ের স্বার্থ বিবেচনাই সরকারের লক্ষ্য। পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিশ্চিত করতে উন্নত জাতের বীজ, বিনামূল্যে সার ও সংরক্ষণ প্রযুক্তি দেওয়া হচ্ছে; এরই অংশ হিসেবে ৮ হাজার ‘এয়ার ফ্লো মেশিন’ স্থাপন করা হয়েছে।

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD