Logo

বিজয় দিবস: ইতিহাস, দায়িত্ব ও আত্মসম্মান

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:০৪
3Shares
বিজয় দিবস: ইতিহাস, দায়িত্ব ও আত্মসম্মান
ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীর ইতিহাসে যে সকল স্বাধীন রাষ্ট্র আজ আত্মমর্যাদা ও গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের প্রত্যেকটির পেছনেই রয়েছে এক একটি দীর্ঘ, মর্মান্তিক ও রক্তাক্ত ইতিহাস।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতা কখনোই হঠাৎ করে আসে না, এটি কোনো দানের বিষয় নয়; বরং স্বাধীনতা জন্ম নেয় শত বছরের শোষণ, বৈষম্য, নিপীড়ন এবং আত্মত্যাগের ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশের ইতিহাসও সেই বিশ্বজনীন সত্যেরই এক উজ্জ্বল, অথচ বেদনাবিধুর উদাহরণ। আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এক রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। নয় মাসের এই যুদ্ধ ছিল কেবল সামরিক সংঘর্ষ নয়; এটি ছিল একটি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই, একটি ভাষা ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম, এবং সর্বোপরি মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারের ঐতিহাসিক অভিযান।

উপমহাদেশ বিভাজন ও বাঙালির বঞ্চনার সূচনা: বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বুঝতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হয় ১৯৪৭ সালের উপমহাদেশ বিভাজনের প্রেক্ষাপটে। দীর্ঘ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হয় ভারত ও পাকিস্তান এই দুই রাষ্ট্রে। ধর্মের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তানের দুটি অংশ ছিল পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান (আজকের বাংলাদেশ)। ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন এই দুই অংশের মধ্যে দূরত্ব ছিল প্রায় দেড় হাজার মাইল, সংস্কৃতি, ভাষা ও জীবনধারায় ছিল মৌলিক পার্থক্য। পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকেই ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয় পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ব বাংলার জনগণ ক্রমাগত বঞ্চনার শিকার হতে থাকে। অর্থনীতি, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, শিল্পায়ন সব ক্ষেত্রেই পূর্ব পাকিস্তানকে পরিণত করা হয় শোষিত জনপদে। পূর্ব বাংলার মানুষ ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও রাষ্ট্রক্ষমতায় তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল নগণ্য।

ভাষা আন্দোলন: জাতীয় চেতনার প্রথম বিস্ফোরণ: এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম সুসংগঠিত প্রতিবাদ প্রকাশ পায় ভাষার প্রশ্নে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দিলে বাংলাভাষাভাষী জনগণ তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনে শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও অনেকে। ভাষা আন্দোলন কেবল ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছিল না; এটি ছিল বাঙালির আত্মপরিচয়, সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র ও জাতীয় চেতনার প্রথম সুস্পষ্ট ঘোষণা। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি বুঝতে শেখে নিজস্ব অধিকার আদায় করতে হলে সংগঠিত প্রতিরোধ ছাড়া বিকল্প নেই।

বিজ্ঞাপন

রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের পথে: পরবর্তী দুই দশকে পূর্ব পাকিস্তানে একের পর এক রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে ওঠে। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে সুসংহত করে। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থাকে কাঁপিয়ে দেয়। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ নিরঙ্কুশভাবে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করলেও পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়।

এই রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতাই শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করে তোলে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা, রাজারবাগ কোথাও রেহাই পায়নি সাধারণ মানুষ।

বিজ্ঞাপন

প্রকৃতি, ঐতিহ্য ও ভবিষ্যতের বাংলাদেশ: বাংলাদেশ শুধু সংগ্রামের ইতিহাসে সমৃদ্ধ নয়; এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব ভূখণ্ড। নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, উর্বর সমতল ভূমি ও বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি মিলিয়ে এই দেশ এক অনন্য বৈচিত্রের প্রতীক। এই ভূপ্রকৃতি যেমন আমাদের জীবিকা দেয়, তেমনি আমাদের সংস্কৃতি ও জীবনবোধ গড়ে তোলে। এই দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে কেবল উন্নয়নের পরিসংখ্যান নয়, মানবিক মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার ও ইতিহাসচেতনার সমন্বয় অপরিহার্য।

ইতিহাসের দায় ও স্বাধীনতার মর্যাদা: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা যদি আমরা ইতিহাসের আলোকে গভীরভাবে অনুধাবন করি, তবে সেই কালো দিনগুলোর বিভীষিকা আজও আমাদের চেতনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এটি কেবল একটি যুদ্ধ নয়; এটি ছিল একটি জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম, যেখানে পরিকল্পিত গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও নিপীড়ন ছিল দখলদার শক্তির রাষ্ট্রীয় নীতি। সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত ‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’-এও আমরা দেখতে পাই, কীভাবে নিরস্ত্র জনগণ ও ছাত্রসমাজ রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার হয়েছে।

অনেক ক্ষেত্রে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার মতো অমানবিক ঘটনার সাক্ষী আমরা। জুলাই অভ্যুত্থানে বহু মা-বাবা দেশ ও ভবিষ্যতের আশায় সন্তানদের রাজপথে নামতে উৎসাহিত করেছিলেন; অথচ সেই রাজপথেই অনেক তরুণের জীবন নিভে গেছে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া এখনো চলমান, এবং আমরা সে বিচার প্রত্যক্ষ করছি যা ন্যায়বিচারের প্রতি জনগণের আকাঙ্খাকে প্রতিফলিত করে।

বিজ্ঞাপন

একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ধর্মের অপব্যবহার করে আমাদের মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি করেছে, অসংখ্য নারীকে ধর্ষণের মাধ্যমে গর্ভবতী করেছে, আবার অনেককে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে আমাদের বাবা, ভাই ও স্বজনদের। প্রশ্ন জাগে আমাদের অপরাধ কী ছিল? অপরাধ ছিল কেবল অধিকার চাওয়া, পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে চাওয়া। নিজেদের মুসলমান দাবি করেও তারা আমাদের ন্যায্য অধিকার অস্বীকার করেছে এবং গণহত্যার মাধ্যমে একটি জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, সম্পদ লুণ্ঠন, শিশু হত্যা এমন কোনো বর্বরতা নেই যা তারা করেনি।

মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের মহাকাব্য: পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক সমাজের সব শ্রেণির মানুষ এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হন, দুই লক্ষাধিক মা-বোন সম্ভ্রম হারান এবং এক কোটির বেশি মানুষ শরণার্থী হয়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এই যুদ্ধের প্রতিটি দিন ছিল রক্ত, অশ্রু ও অসহনীয় বেদনায় ভরা। অগণিত লাশ নদীতে ভেসে গেছে, অনেক দেহ শকুন-কুকুরের খাদ্যে পরিণত হয়েছে, আবার বহু মানুষ সাগরের গভীরে হারিয়ে গেছে। এসব মৃত্যুর নির্ভুল পরিসংখ্যান নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবু শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, যা ইতিহাসস্বীকৃত ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগকে সংখ্যার কষাঘাতে সীমাবদ্ধ করার প্রয়াস একটি গভীর ইতিহাসবিমুখতা।

বিজ্ঞাপন

আজকের দিনে বাংলাদেশের মিডিয়া পাড়া ও রাজনৈতিক পরিসরে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে অবিরাম যুক্তি-তর্ক-বিতর্ক, দোষারোপ ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য জাতীয় ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এতে করে নতুন প্রজন্ম বিভ্রান্ত হচ্ছে, ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। এই আত্মত্যাগের মধ্যেই ছিল অবিচল সাহস, অদম্য প্রত্যয় এবং স্বাধীনতার প্রতি অটুট বিশ্বাস। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয় এবং জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। দুঃখজনক হলেও সত্য, আজ জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের অবমূল্যায়নের প্রবণতাও দেখা যায়, যেন তাঁদের জীবনবাজির বিনিময়েই এই দেশের জন্ম সে সত্য ভুলে যাওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতার তাৎপর্য বোঝাতে একটি তুলনা প্রাসঙ্গিক: গর্ভাব্যস্থায় নিভে যাওয়া জীবনের কোনো ভবিষ্যৎ থাকে না, আর জন্ম নিয়ে বেড়ে ওঠা জীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর শক্তি পায়। পাকিস্তানের অধীনে থাকা মানে ছিল সেই সম্ভাবনার আগেই মৃত্যুবরণ করা; স্বাধীনতা মানে ছিল ইতিহাসের আলোয় আত্মপ্রকাশ। এই কারণেই স্বাধীনতাকে সম্মান করা নৈতিক দায়িত্ব এবং শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো মানবিক কর্তব্য। এই শ্রদ্ধাবোধই জাতিকে মানবিক ও আত্মমর্যাদাশীল করে তোলে।

বিজ্ঞাপন

মুক্তযিুদ্ধরে অপরাধ ও ইতহিাসরে ন্যায়: মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষ ছিল আরেকটি মানবিক বিপর্যয়। আজ প্রশ্ন আসে সেই অপরাধীদের কি আমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পেরেছি? বাস্তবতা হলো, তা সম্ভব হয়নি। তারা কখনো তাদের অপরাধের জন্য অনুশোচনা করেনি, ক্ষমাও চায়নি। তাহলে ইতিহাস ও মানবতার বিচারে প্রশ্ন ওঠে আমরা কেন পাকিস্তানপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হব? ইতিহাসের নিষ্ঠুর সত্য অস্বীকার করে কোনো জাতি কখনো আত্মমর্যাদা রক্ষা করতে পারে না।

মুক্তিযদ্ধে আত্মত্যাগের মহাকাব্য: এই বর্বরতার বিরুদ্ধে বাঙালি অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক সব শ্রেণির মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। নয় মাসের যুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হন, দুই লক্ষাধিক মা-বোন সম্ভ্রম হারান, এক কোটির বেশি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এই যুদ্ধের প্রতিটি দিন ছিল রক্ত, অশ্রু ও বেদনার ইতিহাস। কিš‘ সেই সঙ্গে ছিল অবিচল সাহস, অদম্য প্রত্যয় ও স্বাধীনতার প্রতি অটুট বিশ্বাস। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

বিজ্ঞাপন

বিজয় দিবস ও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব: বিজয় দিবস স্মরণ করিয়ে দেয় স্বাধীনতা কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়; এটি সমগ্র জাতির অর্জন, ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ ও অসংখ্য মা-বোনের ত্যাগে অর্জিত অমূল্য সম্পদ। এই দিনে আমাদের দায়িত্ব সত্য ইতিহাস সংরক্ষণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে রাখা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা। ন্যায়ভিত্তিক, বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়াই হোক মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার। বিজয় দিবস যেন কেবল আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ না থাকে; চেতনা ও আচরণে ধারণ করি। ইতিহাস বিকৃতির নয়, সংরক্ষণের শপথেই হোক আমাদের বিজয়।

কলামিস্ট ও ব্যাংকার: কায়ছার উদ্দীন আল-মালেকী

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD