এখনও ছাপা হয়নি পাঠ্যবই, বঞ্চিত থাকছে কোটির বেশি শিক্ষার্থী

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি মাত্র তিন দিন। তবে মাধ্যমিক স্তরের সাড়ে ১১ কোটির বেশি পাঠ্যবই এখনও ছাপা হয়নি। এর ফলে ১ জানুয়ারি পাঠ্যবই হাতে না পেয়ে নতুন ক্লাস শুরু করতে হবে প্রায় এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে।
বিজ্ঞাপন
পাঠ্যবই ছাপার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সংক্রান্ত সূত্র জানিয়েছে, এই অচলাবস্থা এক প্রভাবশালী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও তার সহযোগী কয়েকজন স্বতন্ত্র পেপার মিল থেকে কাগজ কেনা সীমিত রেখে নির্দিষ্ট প্রেসগুলোকে সুবিধা দিচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা বই পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বাধ্য হবেন।
বিজ্ঞাপন
২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য এনসিটিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রায় ৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের সংখ্যা ২১ কোটি ৪৩ লাখ ২৪ হাজার, বাকি প্রাথমিক স্তরের। যদিও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি স্তরের বই উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে, মাধ্যমিকের বই এখনও বাকি। বিশেষ করে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই ছাড়া ক্লাসে যাবে।
শ্রেণিভিত্তিক বই ছাপার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অষ্টম শ্রেণিতে। ৪ কোটি ২ লাখ বইয়ের মধ্যে মাত্র ১৮ লাখ ৯ হাজার বই ছাপা হয়েছে, যা মোট বইয়ের মাত্র সাড়ে চার শতাংশ। সপ্তম শ্রেণিতে ৪ কোটি ১৫ লাখ বইয়ের মধ্যে ছাপা হয়েছে ৭০ লাখ ৫৫ হাজার। ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির বই কিছুটা বেশি ছাপা হলেও এখনও পুরো পরিমাণ হয়নি।
এনসিটিবি সূত্র বলছে, অবহেলার পাশাপাশি সিন্ডিকেটের কারণে পছন্দের প্রেসকে বেশি কাজ পাইয়ে দিতে কাগজের মানে শিথিলতা আনা হয়েছে। এছাড়া পাঁচটি প্রেস মিলের সঙ্গে অঘোষিত চুক্তির মাধ্যমে বড় অঙ্কের কমিশন বাণিজ্যে লিপ্ত থাকা অভিযোগও উঠেছে। এতে অন্যান্য প্রেসগুলো কম মানের কাগজে বই ছাপার দিকে ঝুঁকেছে।
বিজ্ঞাপন
এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানান, এই সিন্ডিকেটের কারণে ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির বইয়ের কার্যক্রম দেরিতে হচ্ছে। তবে অন্যান্য শ্রেণির বই শিক্ষার্থীরা সময়মতো পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সিন্ডিকেটে যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে এনসিটিবির সচিব মো. সাহতাব উদ্দিন বলেছেন, অভিযোগটি সঠিক নয়, এই বিষয়ে আরও খোঁজ নিন।
বিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় শিক্ষক ও অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন, ১ জানুয়ারি ক্লাস শুরু হলেও বড় সংখ্যক শিক্ষার্থী বই না পেয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাহত হতে পারে।








