সালমান শাহকে নিয়ে লেখা বই কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল?

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহ, যার অকাল মৃত্যু আজও রহস্যে ঘেরা। মৃত্যুর পর তার জীবন ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অসংখ্য বিতর্কের জন্ম হয়। সেই বিতর্কের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল সাংবাদিক রবি আরমানের লেখা বই ‘সালমান শাহ, নক্ষত্রের আত্মহত্যা’, যা ১৯৯৭ সালে প্রকাশের পরপরই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বইটি প্রকাশের পরই সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী আদালতের দ্বারস্থ হন। তার অভিযোগ ছিল- বইটিতে “আত্মহত্যা” শব্দটি ব্যবহার করে লেখক তার ছেলের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে বইটির বিক্রি, বিতরণ ও প্রকাশনা নিষিদ্ধ করেন। পরে বাজার থেকে বইটির সব কপি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
বইটিতে লেখক সালমান শাহের জীবনের শেষ সময়, তার মানসিক অবস্থা এবং ক্যারিয়ারের উত্থান-পতনের এক গভীর ও আবেগঘন চিত্র তুলে ধরেছিলেন।
বিজ্ঞাপন
বইটিতে লেখা ছিল, আমাদের সিনেমার বাগানে একটি ফুল ফুটেছিল। সুবাসিত এবং উজ্জ্বল। আলোকিত হয়ে উঠেছিল চারপাশ। নাম তার সালমান শাহ। চন্দ্রালোকে ভেসে যাওয়া সেই সফল ও উচ্ছল যুবকের দেহে বিঁধেছিল গোপন এক বিষকাঁটা। অন্তর্লীন যাতনায় নীল হয়ে এক শুভ্রসকালে হঠাৎ সে আত্মদংশনে হারিয়ে যায়। তারপর সেই বাগানে পাখিরা আর গান গায় না। ফুল ফোটে না। বাতাসে ভাসে বিষাদের একটানা করুণ সুর।
এই বর্ণনা পাঠকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেললেও, সালমান শাহের পরিবারের কাছে এটি ছিল বেদনার। তার মা প্রকাশ্যে জানান, তিনি কখনোই ছেলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে মানেন না। তিনি বিশ্বাস করেন, তার ছেলে হত্যার শিকার হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বিনোদন বিশ্লেষকদের মতে, বইটির নিষিদ্ধ হওয়ার প্রধান কারণই ছিল “আত্মহত্যা” শব্দের ব্যবহার। যদিও অনেকে মনে করেন, বইটি সালমান শাহের জীবনের অজানা অধ্যায়গুলো তুলে ধরেছিল এবং চলচ্চিত্র ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে রয়ে যেতে পারত।
সালমান শাহের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত, বিতর্ক ও ষড়যন্ত্রের গল্প আজও শেষ হয়নি। কিন্তু সেই সময়ের নিষিদ্ধ এই বইটি এখনো অনেকের কাছে এক রহস্যময় দলিল হয়ে আছে।








