ভারতের বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে ‘ধুরন্ধর’, অথচ মধ্যপ্রাচ্যে নিষিদ্ধ

ভারতের বক্স অফিসে দাপটের সঙ্গে চলেছে বলিউডের স্পাই থ্রিলার ছবি ‘ধুরন্ধর’। বছর শেষের প্রান্তে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই আয় ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। রণবীর সিংয়ের শক্তিশালী অভিনয়ের পাশাপাশি অক্ষয় খান্নার বিশেষ উপস্থিতি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।
বিজ্ঞাপন
গত ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ছবিটি দ্বিতীয় শনিবারে এসে সর্বোচ্চ দৈনিক আয় করেছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, মুক্তির দিনে ‘ধুরন্ধর’ আয় করে ২৮ কোটি টাকা। প্রথম সপ্তাহ শেষেই ছবিটির আয় দাঁড়ায় ২০৭.২৫ কোটি টাকায়। দ্বিতীয় সপ্তাহের শুক্রবারে আয় হয় ৩২.৫ কোটি টাকা, আর শনিবার সেই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪.৬ কোটি টাকায়। সব মিলিয়ে সর্বশেষ হিসাব পর্যন্ত ছবিটির মোট আয় ২৮৩.৮১ কোটি টাকা। বাণিজ্য বিশ্লেষকদের ধারণা, দ্বিতীয় রোববারেই ছবিটি ৫০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করতে পারে, যার ফলে খুব দ্রুতই ৩০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করবে ‘ধুরন্ধর’।
আরও পড়ুন: ডিপ্রেশনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন শুভশ্রী
তবে ভারতের অভ্যন্তরীণ সাফল্যের বিপরীতে আন্তর্জাতিক বাজারে ছবিটি বড় বাধার মুখে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে ‘ধুরন্ধর’ প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বলিউড হাঙ্গামার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘পাকিস্তান-বিরোধী বার্তা’ থাকার অভিযোগে বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছবিটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এসব দেশের সেন্সর বোর্ড ছবিটির রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল বিষয়বস্তুর ওপর আপত্তি তোলে। এর আগেও এ ধরনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের হিন্দি ছবিগুলো উপসাগরীয় অঞ্চলে মুক্তির ছাড়পত্র পায়নি। নির্মাতা পক্ষ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত কোনো দেশ থেকেই অনুমোদন মেলেনি।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অবশ্য জানিয়েছে, ‘ধুরন্ধর’ মূলত একটি স্পাই থ্রিলার, যার গল্পের পটভূমি পাকিস্তান। ছবির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে হামজা আলি মাজারি নামের এক রহস্যময় চরিত্রকে ঘিরে, যিনি লিয়ারি এলাকার কুখ্যাত রহমান ডাকাতের গ্যাংয়ে গোপনে অনুপ্রবেশ করেন। রণবীর সিং ছাড়াও ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অক্ষয় খান্না, অর্জুন রামপাল, আর. মাধবন ও সারা অর্জুন।
দর্শকদের কাছ থেকে প্রশংসা পেলেও সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র। রিভিউ ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে ফিল্ম ক্রিটিক্স গিল্ড। এক বিবৃতিতে তারা সমালোচকদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ, হয়রানি ও ঘৃণা ছড়ানোর প্রবণতার নিন্দা জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: নতুন রূপে ভেসে উঠলেন জয়া আহসান
সত্য ঘটনা দ্বারা অনুপ্রাণিত এই ছবিতে সংসদ ভবনে বিস্ফোরণ, মুম্বাইয়ের তাজ হোটেল হামলা এবং বিমান ছিনতাইয়ের মতো আলোচিত ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে। শুরুতে ধারণা করা হলেও যে ছবিটি মেজর মোহিত শর্মার জীবনী অবলম্বনে তৈরি, পরিচালক আদিত্য ধর সেই দাবি নাকচ করেছেন।
সবকিছু মিলিয়ে, একদিকে ভারতের বক্স অফিসে রেকর্ড গড়া সাফল্য, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নিষেধাজ্ঞা—এই দ্বৈত বাস্তবতায় ‘ধুরন্ধর’ এখন একই সঙ্গে ব্যবসায়িক সাফল্য ও তীব্র বিতর্কের নাম।








