প্রকৃত শিল্পী কখনো ধ্বংসের পথে হাঁটে না : মোশাররফ করিম

নাটক, সিনেমা কিংবা সংগীত—এগুলো কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, মানুষের অনুভূতি, মনন ও জীবনদর্শনের প্রতিফলনও বটে। জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম মনে করেন, একটি সুস্থ ও মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে শিল্পচর্চার পাশাপাশি শিল্পবোধ থাকা অত্যন্ত জরুরি।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে শিল্প ও সমাজ নিয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরেন এই অভিনেতা। সেখানে তিনি বলেন, সবাইকে শিল্পী হতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে প্রত্যেক মানুষের ভেতরে যদি শিল্পবোধ থাকে, তাহলে সমাজ অনেক বেশি সুন্দর ও দায়িত্বশীল হয়ে উঠতে পারে।
নিজের বক্তব্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মোশাররফ করিম বাস্তব জীবনের উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে যদি সুন্দরের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকত, তাহলে বুড়িগঙ্গার মতো একটি নদী কখনো এতটা দূষিত হতো না। যার ভেতরে সৌন্দর্যবোধ আছে, সে কখনোই প্রকৃতিকে নষ্ট করার মতো কাজ করতে পারে না। পানিতে ময়লা ফেলা বা পরিবেশ ধ্বংস করার মানসিকতা শিল্পবোধসম্পন্ন মানুষের সঙ্গে যায় না বলেই মনে করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
বর্তমান সময়ে শিল্প-সংস্কৃতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে—বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে নাটক, সিনেমা, অভিনয় বা গানের গুরুত্ব আদৌ কতটা—এমন প্রশ্নও অনেকের মনে ঘুরপাক খায়। এই প্রসঙ্গে নিজের অভিনয় জীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন মোশাররফ করিম।
তিনি বলেন, অভিনয় করতে গিয়ে প্রতিদিনই তিনি নতুন কিছু শিখেছেন, যার অন্যতম হলো সৎ ও মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা।
তার মতে, শিল্পচর্চা মানুষের চরিত্র গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। অভিনয়, নাটক বা সিনেমার মধ্য দিয়ে একজন মানুষ ধীরে ধীরে নিজের ভেতরের মানবিক গুণগুলোকে চিনতে শেখে। সেখান থেকেই ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে।
বিজ্ঞাপন
এই অভিনেতার দৃঢ় বিশ্বাস, একজন প্রকৃত শিল্পী কখনোই ধ্বংসাত্মক কাজে জড়াতে পারে না। তিনি বলেন, ইতিহাস ঘেঁটে দেখলেও এমন উদাহরণ পাওয়া কঠিন—যেখানে একজন সত্যিকারের শিল্পী সন্ত্রাসী হয়েছে কিংবা সমাজবিরোধী কোনো কাজে লিপ্ত হয়েছে। কারণ শিল্প মানুষকে সংবেদনশীল করে তোলে, সহমর্মিতা শেখায় এবং অন্যের কষ্ট বোঝার ক্ষমতা তৈরি করে।
সবশেষে মোশাররফ করিম বলেন, তিনি চান না সবাই শিল্পী হোক। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, সমাজের প্রতিটি মানুষের ভেতরে যদি ন্যূনতম শিল্পবোধটুকু থাকে, তাহলে মানুষ আরও দায়িত্বশীল হবে, সহিংসতা কমবে এবং সমাজ ধীরে ধীরে আরও মানবিক হয়ে উঠবে।








