আমাকে ভক্তদের ঋণ শোধ করতে হবে, নতুন যাত্রায় থালাপতি

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে যিনি আলো, ক্যামেরা আর অ্যাকশনের ভেতরেই কাটিয়েছেন জীবন—সেই তামিল সুপারস্টার থালাপতি বিজয় অবশেষে অভিনয় জীবনের ইতি টানলেন।
বিজ্ঞাপন
মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করা বিজয় ৫১ বছর বয়সে এসে ৩৩ বছরের দীর্ঘ ও সফল ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করলেন।
সদ্য মালয়েশিয়ার একটি স্টেডিয়ামে তার আসন্ন ও শেষ চলচ্চিত্র ‘জানা নায়গান’-এর গানমুক্তির অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। হাজারো ভক্তের উপস্থিতিতে সেদিনই বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, এই ছবিটিই তার অভিনয় জীবনের শেষ অধ্যায়। ঘোষণাটি শোনামাত্রই আবেগে ভাসে প্রেক্ষাগৃহ, স্তব্ধ হয়ে যান ভক্তরা।
বিজ্ঞাপন
অবসর ঘোষণার মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজয় খোলামেলা ভাষায় নিজের অনুভূতির কথা জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রশংসার পাশাপাশি নানা ধরনের সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। ইতিবাচক ও নেতিবাচক—দুই ধরনের মন্তব্যই সহ্য করতে হয়েছে নীরবে। সেই আক্ষেপের কথাও তিনি প্রকাশ করেন।
তবে সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে ভক্তদের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতার কথাই তুলে ধরেন এই তামিল তারকা। বিজয়ের ভাষায়, “ভক্তদের নিঃশর্ত ভালোবাসাই ছিল আমার চলার শক্তি। তাদের মুখের দিকে তাকিয়েই আমি আজ এই জায়গায় পৌঁছেছি।”
ভক্তদের কাছে নিজেকে চিরঋণী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ। অভিনয়ের ৩৩ বছরে আমি যে ভালোবাসা পেয়েছি, আগামী ৩৩ বছর তা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। বাকি জীবনটা ভক্তদের ঋণ শোধ করতেই কাজ করে যেতে চাই।
বিজ্ঞাপন
এদিকে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরার সময় রোববার সন্ধ্যায় চেন্নাই বিমানবন্দরে আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রিয় তারকার এক ঝলক দেখার জন্য ভক্তদের প্রচণ্ড ভিড় জমে যায়। হুড়োহুড়ির একপর্যায়ে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান বিজয়। নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত তাকে সামলে নেন। এ ঘটনায় উপস্থিত ভক্তদের মধ্যেও মুহূর্তের জন্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকতেই অভিনয় ছেড়ে রাজনীতিতে নাম লেখান থালাপতি বিজয়। তিনি গঠন করেন নিজস্ব রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেটরি কাজাগম (টিভিকে)। দল ঘোষণার আট মাস পর, ২০২৪ সালের অক্টোবরে প্রথম জনসভায় অংশ নেন তিনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার দল তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
বিজ্ঞাপন
চেন্নাইয়ে জন্ম নেওয়া যোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখরকে ভক্তরা ভালোবেসে ডাকেন ‘থালাপতি’—অর্থাৎ সেনাপতি। একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা, আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিক ও সুপারস্টারডমের শিখরে থেকেও তিনি বেছে নেন ভিন্ন পথ। ঝলমলে চলচ্চিত্রজগতকে পাশে সরিয়ে রেখে বিজয় এখন রাজনীতির ময়দানে—ভক্তদের ভালোবাসার ঋণ শোধ করাই যার নতুন জীবনের অঙ্গীকার।








