‘আমাকে সাসপেন্ড করেন’ বলতে থাকা চিকিৎসককে অব্যাহতি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবু জাফরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার ঘটনায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় মমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।
এ সময় ওই ডিজির উদ্দেশে বার বার বলতে থাকেন, ‘আমাকে সাসপেন্ড করেন, নো প্রব্লেম’।
এ দিন শিশুদের মূত্রাশয় ও প্রজননতন্ত্র সম্পর্কিত রোগের চলমান চিকিৎসার সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে এক সেমিনারে অংশ নিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য মহাপরিচালক। সেমিনারে যোগ দেওয়ার আগে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, এ বিভাগের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটারসহ বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন ডিজি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৫ জনের
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনে গিয়ে ডিজি ভেতরে ‘টেবিল’ দেখে চিকিৎসকদের কাছে এর কারণ জানতে চান। এ সময় চিকিৎসক ধনদেব বর্মণ লেখালেখির প্রয়োজনে টেবিল রাখা হয়েছে বলে জানান।
কথোপকথনের একপর্যায়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘আপনি কার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন, কথাবার্তা হুঁশ করে বলবেন।’ এ সময় নিজের সঙ্গীয় লোকদের ভিডিও করতে বলেন তিনি। ডিজি বলেন, ‘যারা ডিজির সঙ্গে এমন ব্যবহার করে, তারা রোগীর সঙ্গে কেমন ব্যবহার করে!’
বিজ্ঞাপন
প্রত্যুত্তরে চিকিৎসক ধনদেব বলেন, ‘আমি রোগীর সঙ্গে অনেক ভালো বিহেব করি; কিন্তু যারা দায়িত্বে আছে তাদের সঙ্গে আমার বিহেব ভালো না।’ কারণ হিসেবে চিকিৎসক সম্প্রদায় দেশের জনগণের পক্ষে নয় বলে উল্লেখ করলে ডিজি জবাব দেন, ‘এটা তো অন্য বিষয়। কিন্তু আপনি তো বিহেবই শেখেননি।’
এ সময় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া চিকিৎসক ধনদেব অন্য প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘ঢাকায় তিন দিনের ট্রেনিং করলাম, আপনার দুদিন আসার কথা ছিল— একদিনও আসেননি।’ এরপর উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বিজ্ঞাপন
এ সময় চিকিৎসক ধনদেব উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকেন, ‘আমাকে সাসপেন্ড করেন, নো প্রবলেম।’ এর মধ্যে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস ও উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম উদ্ভুত পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
পরে পরিদর্শন শেষে ডিজি ডা. আবু জাফর গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, বাংলাদেশের সব হাসপাতালেই ধারণা ক্ষমতার বেশি রোগী। যে কোনো সময় হিসাব করলে দেখা যাবে— সারা দেশে ১৫ হাজার রোগী মেঝেতে থাকে। যদি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালগুলোয় পর্যাপ্ত মানসম্মত সেবা দেওয়া যায়, তাহলে মেডিকেল কলেজগুলোয় চাপ কমে যাবে।
অর্ধেক নির্মাণকাজ হয়ে আটকে থাকা ময়মনসিংহ শিশু হাসপাতাল সম্পর্কে তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে না হওয়ার কারণে মাঝপথে থেমে গেছে। এ জটিলতা সমাধানে সময় লাগবে। অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে আর সময় নেই, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার এসে পদক্ষেপ নেবে।
বিজ্ঞাপন
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. রুহুল আমিন, মমেকের অধ্যক্ষ ডা. নাজমুল আলম খান, মমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস, এপিএসবির সাধারণ সম্পাদক ডা. নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ সভাপতি ডা. মো. মোকারাবিন (রবিন) প্রমুখ।







