হাসিনার ফাঁসির রায়ের পক্ষে নয় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অনুপস্থিতিতে বিচার ও মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পৃথক বিবৃতিতে এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) উল্লেখ করেছে, দুই আসামির অনুপস্থিতিতে বিচার পরিচালনা করা হয়েছে এবং তারা তাদের পছন্দের আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ পাননি।
সংস্থার ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, হাসিনার শাসনামলের সময় জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চলেছে, কিন্তু সকল ফৌজদারি কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের মান বজায় রাখা অপরিহার্য।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিশ্বাসযোগ্য বিচারের মাধ্যমে নির্যাতনের দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরোধিতা করেছে। সংস্থা বলেছে, এটি একটি ‘ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’, তবে বিচার প্রক্রিয়া যেন আন্তর্জাতিক মান পূরণ করে, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ ন্যায়বিচার, ক্ষতিপূরণ এবং সত্য প্রকাশের মাধ্যমে জাতীয় সংহতি ও উত্তরণের পথে এগোবে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মৃত্যুদণ্ডকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অমানবিক শাস্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে ছাত্র আন্দোলনের সময় সহিংসতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ীদের যথাযথ বিচারের মাধ্যমে দায়িত্ব নিশ্চিত করা উচিত ছিল। কিন্তু এই বিচার ও সাজা নিরপেক্ষ বা ন্যায়সঙ্গত নয়।
বিজ্ঞাপন
তারা আরও বলেন, আসামিদের অনুপস্থিতিতে রায়ের গতি এবং জটিল মামলার ন্যায়বিচার নিয়ে উদ্বেগ গুরুতর।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং জাতিসংঘ একমত যে, সঠিক ও নিরপেক্ষ বিচার ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের রায় আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের মান পূরণ করছে না। তারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরব হয়েছেন, যাতে বাংলাদেশের জনগণ ও ভুক্তভোগীরা যথাযথ ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণের সুযোগ পায়। এই পরিস্থিতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা








