রাত জাগার অভ্যাস? অজান্তেই বাড়াচ্ছেন হার্ট অ্যাটাক

আধুনিক নাগরিকদের জীবন যাপন ব্যস্ততা, আর প্রযুক্তির অতি ব্যবহারের ফলে মানুষের স্বাভাবিক ঘুমের চক্র বিঘ্নিত হচ্ছে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব শুধু ক্লান্তি নয়, বরং শরীর ও মনে দীর্ঘমেয়াদি ও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিজ্ঞাপন
সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. হাসান মোস্তফা রাশেদের মতামতে, ঘুমের নির্দিষ্ট স্তরগুলো শরীরের অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘুমের এই চক্র বা স্তরগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন না হলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: খুশকি দূর করতে শুধু শ্যাম্পুই যথেষ্ট নয়
বিশেষ করে যারা রাতের শিফটে কাজ করেন এবং দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকেন, তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও স্থূলতা বা মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
গবেষণায় জানা গেছে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন গড়ে ৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন। বয়স ভেদে এই চাহিদার ভিন্নতা রয়েছে; যেমন নবজাতকদের ১৮ ঘণ্টা এবং কিশোর-কিশোরীদের অন্তত ১০ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি।
ঘুমের সময় শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং মস্তিষ্কের বর্জ্য নিষ্কাশিত করে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে, যার ফলে মনোযোগের ঘাটতি, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, বিষণ্ণতা এবং দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিবিভ্রমের মতো সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এমনকি অনিদ্রার কারণে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা এবং যৌন উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলার মতো গুরুতর মানসিক ও শারীরিক সংকটও তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুন: শীতকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
বিজ্ঞাপন
নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায়, মেনোপজ এবং সন্তান জন্মের পরবর্তী সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ঘুমের মান ও পরিমাণে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদি অবসাদ ও উদ্বেগের দিকে ঠেলে দেয়। এছাড়া ঘুমের অভাবে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে পেটের সমস্যা ও গ্যাসের সমস্যা স্থায়ী রূপ নিতে বাধ্য করে। মাদক, ক্যাফেইন কিংবা সিগারেটের আসক্তিও ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করে মানসিক অসুস্থতা বাড়িয়ে তুলে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যারা রাতে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান, তাদের শরীর দ্রুত রোগাক্রান্ত হয় এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সুস্থ থাকতে এবং বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে সময়মতো ও পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।








