জাতীয় নির্বাচন ঘিরে নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে ইসি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে নতুন নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ নামে এই নীতিমালা শুধুমাত্র দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর জন্য প্রযোজ্য হবে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তারা জানান, নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য হলো- অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে যেকোনো অনিয়ম, ত্রুটি বা বিচ্যুতি শনাক্ত করা এবং ভোটারদের আস্থা বৃদ্ধি করা।
নীতিমালা অনুযায়ী, শুধুমাত্র গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত এবং নিবন্ধিত সংস্থা যাদের গঠনতন্ত্রে অবাধ নির্বাচনের প্রচারে কাজ করার অঙ্গীকার রয়েছে, তারাই পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে।
আরও পড়ুন: সরকারের ৩১ বিভাগকে নিয়ে বৈঠকে বসছে ইসি
বিজ্ঞাপন
ইসি জানিয়েছে, আগ্রহী সংস্থাগুলোকে ১৫ দিনের মধ্যে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নির্ধারিত ফরম (EO-1) ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দিতে হবে।
তবে কোনো সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেন অথবা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে সে সংস্থা নিবন্ধন পাবে না। এ বিষয়ে আবেদনকারী সংস্থাকে হলফনামা দাখিল করতে হবে।
এছাড়া, কোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল আছে এমন সংস্থা, যা জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, তারাও নিবন্ধন পাবে না। অতীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন দাখিল করেছে এমন সংস্থার আবেদনও বাতিল হবে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিটি সংস্থার নিবন্ধন পাঁচ বছরের জন্য বহাল থাকবে। মেয়াদ শেষে শর্তসাপেক্ষে নবায়ন করা যাবে। নিবন্ধিত সংস্থাকে এই সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদের অন্তত একটি সাধারণ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের চারটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এছাড়া প্রতি দুই বছর অন্তর দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদন কমিশন সচিবালয়ে জমা দিতে হবে।
ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষকের জন্য নির্ধারিত কিছু শর্ত হলো-
১. অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
বিজ্ঞাপন
২. বয়স কমপক্ষে ২১ বছর।
৩. ন্যূনতম এইচএসসি বা সমমান পাস।
৪. কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর সঙ্গে স্বার্থ-সংশ্লিষ্টতা থাকবে না।
বিজ্ঞাপন
৫. নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার হওয়া যাবে না।
৬. পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনের আগের দিন, ভোটের দিন এবং পরের দিন মোট তিন দিনের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।
আরও পড়ুন: আজকের পর বন্ধ হচ্ছে অতিরিক্ত সিম
বিজ্ঞাপন
নীতিমালা লঙ্ঘন বা রাষ্ট্রবিরোধী ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইসি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নোটিশ পাঠাবে। ১০ দিনের মধ্যে জবাব সন্তোষজনক না হলে কমিশন সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, নতুন এই নীতিমালা নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা আরও সুদৃঢ় করবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হতে পারে বলেও সূত্র জানিয়েছে।








