Logo

পাতাল মেট্রোরেল প্রকল্পের চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১৪:৫৭
34Shares
পাতাল মেট্রোরেল প্রকল্পের চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল প্রকল্পের দুটি নির্মাণ প্যাকেজের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এর পক্ষ থেকে সম্প্রতি জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) বাংলাদেশ অফিসে দুটি পৃথক চিঠি পাঠানো হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাব হোসাইন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিগুলো গত রোববার ও সোমবার জাইকায় পাঠানো হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অনুমোদিত বাজেটের তুলনায় ঠিকাদাররা অধিক দামের দর দেয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

ডিএমটিসিএলের ৭১তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যদি ঠিকাদাররা অস্বাভাবিকভাবে বেশি দর দাবি করেন, তবে তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হতে পারে। তবে “অত্যধিক ব্যয়” কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে—এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সীমা ঠিক করা হয়নি।

বাতিলের জন্য বিবেচনায় থাকা দুটি প্যাকেজ হলো- সিপি-২: রূপগঞ্জ ডিপো এলাকার অবকাঠামো নির্মাণ, দায়িত্বে চীনের সিনোহাইড্রো। সিপি-৫: নর্দা থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত টানেল ও স্টেশন নির্মাণ, দায়িত্বে জাপানি প্রতিষ্ঠান কাজিমা করপোরেশন।

বিজ্ঞাপন

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুখ আহামেদ বলেন, চিঠি পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য আলোচনার সুযোগ তৈরি করা। এখনই চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে না। যদি ব্যয় যৌক্তিকভাবে কমানো যায়, তাহলে আগের ঠিকাদাররাই কাজ করবে, নাহলে নতুন দরপত্র আহ্বান করা হবে।

তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালের খরচের হিসাব ২০২৪ সালের বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন। সাধারণভাবে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি গ্রহণযোগ্য, কিন্তু ৫০ শতাংশের বেশি হলে তা অস্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাতাল মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ শুরু হয়, লক্ষ্য ছিল ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প সম্পন্ন করা। তবে গত এক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। সকল নির্মাণ প্যাকেজের চুক্তি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এছাড়া আগের সরকারের সময় সম্পাদিত চুক্তি পুনর্বিবেচনা করায় চূড়ান্ত অনুমোদনে দেরি হচ্ছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন ধীরগতিতে এগোচ্ছে। প্রয়োজনে জাইকার ঋণচুক্তিও পুনর্মূল্যায়নের কথা ভাবা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

ডিএমটিসিএলের সাম্প্রতিক বৈঠকের কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, লাইন-১ এবং লাইন-৫ প্রকল্পের কাজ সীমিত পর্যায়ে আছে এবং নিকট ভবিষ্যতে পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।

বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান মন্তব্য করেন, চুক্তি বাতিলের আগে ব্যয় বৃদ্ধির কারণ ও যৌক্তিকতা যাচাই করা জরুরি। সরাসরি বাতিলের উদ্যোগ বিনিয়োগ পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যয় পর্যালোচনার জন্য গঠিত কমিটির মতামত জানা প্রয়োজন। এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ও।

বিজ্ঞাপন

৩১.২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাতাল মেট্রোরেল প্রকল্পের মধ্যে ১৯.৮৭ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ এবং ১১.৩৭ কিলোমিটার উড়ালপথ থাকবে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে জাইকার অর্থায়ন ৩৯,৪৫০ কোটি টাকা এবং সরকারের অংশ ১৩,১১১ কোটি টাকা।

প্রকল্পের প্রস্তুতি ২০১৯ সালে শুরু হয়। ভূমি অধিগ্রহণ, জরিপ ও নকশার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৯৩ একর জমিতে ডিপো নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD