৩৪ বার অস্ত্রোপচারের পর হাসিমুখে মায়ের কোলে ফিরল আরিয়ান

মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হয়ে দীর্ঘ ১২২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর অবশেষে ১২ বছরের শিশু আরিয়ান আফিফ ফিরে এসেছে মায়ের কোলে। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার পর শিশুটি ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ হয়ে ৩৪ বার অস্ত্রোপচার সহ্য করেছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) হাসিমুখে বাড়ি ফেরা এই ‘ছোট্ট যোদ্ধা’ দেশের হাসপাতাল ইতিহাসেও এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জুলাই মাসে দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে আনার সময় আরিয়ানের অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তার জীবন বাঁচাতে তাকে মোট আট দিন আইসিইউ-তে এবং টানা তিন দিন ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল। এই সময় চিকিৎসকরা প্রায় আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন, কিন্তু আরিয়ান হার মানেনি।
বিজ্ঞাপন
গত চার মাসে তার শরীরে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৩৪টি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ত্বক প্রতিস্থাপন বা গ্রাফটিং থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপ ছিল এক একটি যুদ্ধ।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন জানান, এই কেস তাদের ক্যারিয়ারের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং কেস ছিল।
তিনি বলেন, শিশুটির শুধু শরীরই দগ্ধ হয়নি, মানসিকভাবেও সে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিল। শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সাপোর্টে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরিয়ানের মা আবেগপ্লুত হয়ে বলেন, আমি ভেবেছিলাম আমার ছেলেকে আর ফিরে পাব না। ও যতদিন হাসপাতালে ছিল, আমার বাসার দরজা বন্ধ ছিল। আজ ও ফিরে আসায় সেই দরজা আবার খুলে গেল।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরিয়ানকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও তার চিকিৎসার ফলোআপ অব্যাহত থাকবে। পরিবারের কাছে সমস্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে শিশুটির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া সচল থাকে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় আরিয়ানের সাহস, চিকিৎসকদের তৎপরতা এবং পরিবারের ধৈর্য এক অনন্য মানবিক গল্পে পরিণত হয়েছে, যা দুর্ঘটনার পরবর্তী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।








