শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের এক মর্মস্পর্শী দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের উষালগ্নে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটে। মুক্তিসংগ্রামের শেষ পর্যায়ে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই দেশীয় নরঘাতক রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দু’দিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঢাকা শহরে প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেই রাতে তালিকা অনুযায়ী শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী এবং পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনে বের করে হত্যা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলায় বিক্ষিপ্তভাবে দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকের শরীরে বুলেটের চিহ্ন, অনেকে অমানবিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। কিছু লোককে হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের খবর পেয়ে স্বাধীনতার উষালগ্নের মানুষ শিউরে ওঠে এবং স্থবির হয়ে যায়।
১৯৭২ সালে প্রকাশিত জাতীয় সংকলন, সংবাদপত্র ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা ১ হাজার ৭০ জন। এই বুদ্ধিজীবীরা দেশের দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে মেধা, মনন ও লেখার মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগ্রামীদের প্রেরণা জুগিয়েছেন এবং পুরো জাতিকে উদ্দীপ্ত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বুদ্ধিজীবী দিবসকে স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। ১৯৯১ সালে রায়েরবাজারে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ শুরু হয় এবং ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়। প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং কালো পতাকা শোকের প্রতীক হিসেবে উড়ে।








