সব পথ এসে মিশেছে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজাকে ঘিরে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পরিণত হয়েছে শোকস্রোতের মিলনস্থলে। জাতীয় সংসদ ভবনসংলগ্ন এই এলাকায় জানাজাস্থলে রাখা হয়েছে তার মরদেহ। সকাল থেকেই জনসমাগমে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
বিজ্ঞাপন
দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষের চোখেমুখে গভীর শোক আর বেদনার ছাপ। কেউ নীরবে দাঁড়িয়ে, কেউ অশ্রুসজল চোখে, আবার কেউ দলীয় পতাকা হাতে শেষ বিদায়ে শরিক হতে এসেছেন। যেন সব সড়ক, সব পথ এক বিন্দুতে এসে মিলেছে—মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোর হওয়ার আগেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ঢাকামুখী যাত্রা শুরু হয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে। মঙ্গলবার দুপুরের পর সেই স্রোত আরও তীব্র হয়ে ওঠে, যা রাতভর অব্যাহত ছিল।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস জানায়, ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিএনপি নেতাকর্মীরা রাতেই নদীপথে সদরঘাটে পৌঁছান। একই সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ট্রেন ও দূরপাল্লার বাসগুলোতেও ছিল অতিরিক্ত ভিড়। সবার গন্তব্য এক—জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা।
বিজ্ঞাপন
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আশপাশের সড়কজুড়ে সমবেত মানুষের মুখে-মুখে শোকের আবহ। দলীয় কার্যালয়, মিছিল ও সড়কের বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উড়তে দেখা গেছে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে ভোরের আলো ফোটার আগেই মিছিল নিয়ে আসছেন নেতাকর্মীরা। শুধু দলীয় নেতাকর্মীই নয়, দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে এই শোকযাত্রায় শামিল হয়েছেন।
অনেকের কণ্ঠে ছিল স্মৃতিচারণ, অনেকের চোখে অশ্রু। কারও হাতে ফুল, কারও হাতে জাতীয় পতাকা। রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধানের প্রতি শেষ সম্মান জানাতেই এই বিপুল সমাগম।
বিজ্ঞাপন
নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবন মাঠ ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব। জানাজা শেষে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে শেরেবাংলা নগরে তার স্বামী, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে।
এই জানাজাকে ঘিরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ যেন ইতিহাসের এক আবেগঘন অধ্যায়ের সাক্ষী হয়ে উঠেছে—যেখানে শোক, শ্রদ্ধা ও স্মৃতির স্রোতে একাকার হয়েছে লাখো মানুষ।








