আওয়ামী ভোটারদের মন জয়েই ব্যস্ত বিএনপি ও জামায়াত

বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কৌশলে পরিবর্তন এসেছে। মাঠে আওয়ামী লীগ নেই, অথচ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দু’দলই এখন নির্বাচনি ময়দানে সক্রিয়ভাবে অবস্থান নিয়েছে। লক্ষ্য একটাই, আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটারদের সমর্থন টানা।
বিজ্ঞাপন
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, নির্বাচনের আগেই তিনি দেশে ফিরবেন এবং সরাসরি ভোটযুদ্ধে অংশ নেবেন। এই ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি মাঠপর্যায়ে সক্রিয়তা বাড়িয়েছে। তৃণমূলে সভা-সমাবেশ, গণসংযোগ এবং ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা জোরদার করেছে।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীও অনেক আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। তারা একক প্রার্থী নির্ধারণ করে ভোটারদের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মাধ্যমেও নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে।
বিজ্ঞাপন
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় দেখা যায়, বিএনপি উঠান বৈঠক করছে; অন্যদিকে জামায়াত একইদিনে আয়োজন করেছে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। সেখানে করতোয়া নদীর তীরে মঞ্চে দাঁড়িয়ে জামায়াতের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম খান দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
উপজেলা আমীর শাহজাহান আলীর দাবি, “আমরা প্রায় প্রতিটি ঘরে গিয়েছি, ভোটের জন্য এজেন্টদের প্রশিক্ষণও শেষ পর্যায়ে।”
তবে বিএনপির স্থানীয় নেতারা মনে করছেন, জামায়াত তাদের জন্য কোনো বড় হুমকি নয়।
বিজ্ঞাপন
উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “এলাকাটি বিএনপির ঘাঁটি। একাধিক প্রার্থী থাকলেও সবাই ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। ফলে দলের ভিতরে কোনো বিভাজন নেই।”
কিন্তু মাঠপর্যায়ের চিত্র বলছে, দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিন দিন তীব্র হচ্ছে। আওয়ামী লীগ কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকায় সাধারণ ভোটাররা এখন মনোযোগ দিচ্ছেন নতুন সমীকরণে।
সিরাজগঞ্জের স্থানীয় ব্যবসায়ী জামান মিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগ নাই, কিন্তু বিএনপি আর জামায়াতের লড়াই হবে জমজমাট।”
বিজ্ঞাপন
সিরাজগঞ্জে মোট ছয়টি সংসদীয় আসন। সবগুলোতেই বিএনপি ও জামায়াত নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি অমর কৃষ্ণ দাস মনে করেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটাররাও এবার বিএনপিকে ভোট দেবেন।”
বিজ্ঞাপন
তবে জামায়াত নেতারা বলছেন, নিরাপত্তা ইস্যুই এবার বড় ফ্যাক্টর। তাদের দাবি, “অনেক আওয়ামী ভোটার ৫ আগস্টের পর হয়রানির শিকার হয়েছেন। কিন্তু সেটা জামায়াত করেনি। ফলে সাধারণ ভোটাররা এবার নিরাপদ বিকল্প হিসেবে জামায়াতকেই বেছে নেবে।”
সবমিলিয়ে সিরাজগঞ্জসহ সারাদেশে নির্বাচনের মাঠে এখন প্রধান আলোচনার বিষয় হলো আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যবাহী ভোট ব্যাংক এবার কার দিকে ঝুঁকবে? বিএনপি না জামায়াত সেটিই নির্ধারণ করবে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল।