জামায়াতেও প্রার্থী মনোনয়নে বিরোধ, ৪টি আসনে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব

আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়ায় এবার জামায়াতে ইসলামীতে দেখা দিয়েছে বিরোধ ও অসন্তোষ। দীর্ঘদিন ধরেই সুশৃঙ্খল হিসেবে পরিচিত এই দলের মধ্যে চারটি আসনে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দেখা গেছে, আর আরও চারটি আসনে অপ্রকাশ্য বিরোধ রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
পাবনা-৫ (সদর), ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া), কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে প্রকাশ্য বিরোধ, বিক্ষোভ এবং প্রার্থীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে তৃণমূলের আপত্তিতে প্রার্থিতা স্থগিত করা হয়েছে। অপ্রকাশ্য বিরোধের মধ্যে আছে সিলেট-৫, কুষ্টিয়া-৩, চট্টগ্রাম-১৫ ও গাজীপুর-৬ আসন। কুমিল্লার দুটি আসনেও অসন্তোষের গুঞ্জন রয়েছে।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের সমকালকে বলেন, সমর্থক পর্যায়ের কিছু লোক অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ড করেছে। তারা দলীয় শৃঙ্খলা পুরোপুরি বোঝে না। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। রুকন পর্যায়ের জনশক্তি এসব তৎপরতায় জড়িত নয়।
বিজ্ঞাপন
ময়মনসিংহ-৬: মনোনয়ন না পাওয়ায় সাবেক জেলা আমির অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়েছে। তাঁর সমর্থকরা নতুন প্রার্থী অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলনকে ফুলবাড়ীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।
কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা): ২৭ অক্টোবর উত্তর জেলা জামায়াতের গণমিছিলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পক্ষ দাবি করে সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা মোশাররফ হোসেন আওয়ামী লীগের দোসর। ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা সাজিদ আল-আমিন জানান, জেলা আমির ও সেক্রেটারি অবৈধভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। তবে মোশাররফ হোসেন সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পাবনা-৫: সাবেক এমপি মাওলানা ইকবাল হোসেনকে বাদ দিয়ে স্থানীয় নেতারা তিনবারের এমপি আব্দুর রহিমকে প্রার্থী করার দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
অসন্তোষের আরও উদাহরণ আছে চট্টগ্রাম-১৫, কুষ্টিয়া-৩, সিলেট-৫ ও গাজীপুর-৬ আসনে। চট্টগ্রাম-১৫ ও কুষ্টিয়া-৩ আসনে স্থানীয় প্রার্থীর পরিবর্তন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে হয়েছে, যা তৃণমূলের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি করেছে। সিলেট-৫ আসনে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী স্থানীয় প্রার্থী বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী মনোনয়ন দিলে সম্ভাব্য ভোটের ঐক্য না থাকার কারণে হারার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গাজীপুর-৬ আসনে কেন্দ্রের পছন্দে বিদেশ থেকে আসা প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় তৃণমূলের অসন্তোষ রয়েছে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় ঐক্য এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখা তাদের মূল লক্ষ্য। প্রার্থী মনোনয়ন সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রে কাজ চলছে, যাতে নির্বাচনের মাঠে দলের শক্তি বিভাজিত না হয়।
বিজ্ঞাপন
এই পরিস্থিতি দলের দীর্ঘদিনের সুশৃঙ্খল পরিচিতি ভাঙার ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামীকে কৌশলগতভাবে সতর্ক হতে হচ্ছে।








