এই রায়ে প্রমাণ, ক্ষমতাবান কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়: জামায়াত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিচার প্রক্রিয়াকে “স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন” বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বিজ্ঞাপন
দলের ভাষ্য—এই রায়ের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো, রাষ্ট্র কিংবা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কেউই আইনের বাইরে নয়। ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি পূরণ করা না গেলেও তারা অন্তত ন্যায়ের আলো দেখতে পেয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে মগবাজারে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে পরওয়ার বলেন, আজকের দিনটি বাংলাদেশের রাজনীতি ও বিচারব্যবস্থার জন্য মাইলফলক। প্রথমবারের মতো কোনো সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির রায় এসেছে। বিচারকদের রায়ে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে অপরাধীদের নিষ্ঠুরতা, প্রতিহিংসা এবং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, এই বিচারের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। কারণ পুরো বিচারই হয়েছে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে। অতীতে মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে যে বিচার করা হয়েছিল, তা সারা বিশ্বেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সেখানে সাজানো মামলা, সাজানো সাক্ষী, এমনকি আদালত প্রাঙ্গন থেকে সাক্ষী গুমের ঘটনাও ঘটেছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, শপথঘর, ক্রসফায়ার, পিলখানা কিংবা শাপলা চত্বরে যে সব হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তাদেরও বিচার হওয়া উচিত। আজকের রায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। যদিও প্রাণ হারানোদের ক্ষতি কখনোই পূরণ হওয়ার নয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি মনে করেন, যারা বিচারব্যবস্থায় কাজ করবেন, তাদের এই রায় থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। যেন কেউ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সুযোগে ফ্যাসিবাদী বা কর্তৃত্ববাদী হয়ে না ওঠেন, অন্যায়-অত্যাচার না করতে পারেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম, ড. এইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির ও নির্বাহী পরিষদের সদস্য সেলিম উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
জামায়াতে ইসলামী মনে করছে, এই রায় দেশের বিচারব্যবস্থা ও গণতন্ত্রে নতুন আস্থা সঞ্চার করবে এবং ভবিষ্যতে ক্ষমতাসীন যেই হোক, কেউ যেন আইনের ঊর্ধ্বে থাকার সংস্কৃতি তৈরি না করতে পারে।








