জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পেলেন ড. ফয়জুল হক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের জন্য জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পেয়েছেন বিশিষ্ট রাজনীতিক ড. ফয়জুল হক।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠি শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ের পার্টি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট খান হাফিজুর রহমান এ ঘোষণা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এবিএম আমিনুল ইসলাম, জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আবদুর হাই, সদর উপজেলা আমির মাওলানা মনিরুল ইসলাম তালুকদারসহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
বিজ্ঞাপন
মনোনয়ন ঘোষণা করতে গিয়ে জেলা জামায়াতের আমির খান হাফিজুর রহমান বলেন, ড. ফয়জুল হক একজন পরিশীলিত, নীতিবান ও সাহসী ব্যক্তি। স্বতন্ত্র প্রার্থিতা ঘোষণা করার সময়ও আমরা তার পাশে ছিলাম। দলীয় মূল্যায়নের পর দেখা গেছে, তিনি এ অঞ্চলে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। তাই তাকে পূর্ণ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, তার নেতৃত্বে এ আসনে ন্যায়ের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।
মনোনয়ন পাওয়া প্রসঙ্গে ড. ফয়জুল হক বলেন, দাঁড়িপাল্লার মনোনয়ন পেয়ে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দেশপ্রেমিক সরকারের ভিত্তি গড়ে তুলতে পারা আমার জন্য সম্মানের বিষয়।
তিনি আরও ঘোষণা করেন, ঝালকাঠি-১ আসনকে উন্নয়ন, সুশাসন ও সত্য-ন্যায়ের রাজনীতির মডেল হিসেবে গড়ে তোলা তার প্রধান লক্ষ্য। তার নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত প্রশাসন, যুবসমাজের কর্মসংস্থান, নদী ভাঙন রোধ, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, কৃষকদের সরাসরি বাজারসংযোগ এবং এলাকার স্কুল-কলেজে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়, আর আমি সেই পরিবর্তনের বার্তাবাহক হতে চাই।
ড. ফয়জুল হক জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ফ্যাসিবাদ পতনের পর তিনি আমাকে মানসিক শক্তি দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু হবে।
এছাড়া তিনি দেশের বিভিন্ন পীর-মাশায়েখ, আলেম-ওলামা, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, কৃষক ও শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ৪ আগস্ট ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিএনপির মালয়েশিয়া শাখার সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, বিএনপির সাম্প্রতিক অবস্থান ইসলামপন্থিদের প্রতি নেতিবাচক হওয়ায় রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় তিনি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
বিজ্ঞাপন
ড. ফয়জুল হক ওলিয়ে কামেল হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের (রহ.) নাতি। ১৯৮৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পশ্চিম চাড়াখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে বিএ ও এমএ সম্পন্নের পর মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১৯ সালে পিএইচডি এবং ২০২৩ সালে পোস্ট-ডক্টোরাল ফেলোশিপ অর্জন করেন।
তিনি চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট। বড় ভাই অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ছাইফুল হক, মেজ ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ শহীদুল হক এবং সেজ ভাই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আমিনুল হক।
ড. ফয়জুল হক গত ১৬ বছর ধরে অনলাইন টকশো, লেখালেখি ও মাঠপর্যায়ে অন্যায়, জুলুম ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। প্রবাসেও তিনি জুলাই বিপ্লবের সময় জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।








