এনসিপিকে যেসব আসনে ছাড় দিচ্ছে জামায়াত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের আসনে প্রার্থী দাড় করানোর জন্য ছোট ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতার মাধ্যমে কৌশল করছেন। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও অন্যান্য সমমনা দলগুলোকে কাছে টানার জন্য বিশেষ তৎপরতা চালাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তবে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে একাংশ চাইছেন, দল জামায়াতের সঙ্গে কোনো সমঝোতায় না যাক। বিষয়টি বর্তমানে রাজনৈতিক আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দলটির অধিকাংশ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে এনসিপি আসলে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোট গঠন ও আসন সমঝোতার পথে এগোচ্ছে।
জামায়াত ও এনসিপি সূত্রে জানা গেছে, আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে জামায়াত এনসিপির জন্য অন্তত ২০টি আসন ছেড়ে দিতে পারে।
এসব আসনের মধ্যে রয়েছে এনসিপির আহ্বায়ক মো: নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ অন্যান্য জনপ্রিয় নেতাদের আসন।
বিজ্ঞাপন
জোট আলোচনা ওঠার পরপরই পদত্যাগের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক পদত্যাগ করেন। ২৭ ডিসেম্বর সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাঁদের সঙ্গে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব নাহিদ সারোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন ও যুগ্ম সদস্য সচিব নুসরাত তাবাসসুমও জোটের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।
একই সময়ে দলের ৩০ জন কেন্দ্রীয় নেতা আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে চিঠি দিয়ে জোটে না যাওয়ার জন্য নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করার অনুরোধ করেছেন। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মো. মুরসালীন, সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনীসহ অন্যান্য নেতারা।
বিজ্ঞাপন
এর বিপরীতে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৭০ জন নেতা জামায়াতের সঙ্গে জোট বা সমঝোতার পক্ষে অবস্থান জানিয়ে নাহিদ ইসলামকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন সারোয়ার তুষার, ড. আতিক মুজাহিদ, আরিফুল ইসলাম আদীব, জাভেদ রাসীন, আরিফুর রহমান তুহিন, সাইফুল্লাহ হায়দার, আলাউদ্দিন মোহাম্মদসহ অনেকে।
এ বিষয়ে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানিয়েছেন, ঐকমত্যে কমিশনে সংস্কারের বিষয় এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার মূল দিকগুলোর সঙ্গে দলগুলো একমত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সংস্কার, দেশ গঠন ও নতুন রাষ্ট্রকাঠামোকে গড়ে তোলার জন্য যে রাজনীতি, সেটাকেই নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করছি।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল মাহবুব জুবায়েরও জানিয়েছেন, জোটের বাইরেও অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। এনসিপির সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে, এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে।








