Logo

এভারকেয়ারে উপচে পড়া ভিড়, কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৮:৪৩
7Shares
এভারকেয়ারে উপচে পড়া ভিড়, কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার চিরবিদায়ের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের সামনে জড়ো হতে থাকেন দলের হাজার হাজার শোকাহত নেতাকর্মী। তাদের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে প্রিয় নেত্রীকে হারানোর বেদনা। গোটা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিরাজ করছে এক গভীর নিস্তব্ধতা ও শূন্যতার ছাপ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। অন্যান্য রোগীদের যাতায়াত যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্দিষ্ট দূরত্বে নেতাকর্মীদের অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করছে। সকালের তুলনায় দুপুরের দিকে উপস্থিতি কিছুটা কমে এসেছে, তবে শোকের পরিবেশ এতটাই ভারাক্রান্ত যে সেটি অনুভব করা যায় হাসপাতালে প্রবেশের মাত্র কিছু পদক্ষেপেই।

আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১১টায় খালেদা জিয়ার মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে আনা হবে। হাসপাতালের সামনে তাকে দেখার সুযোগ নেই—এই সংবাদ সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ ও দলের নেতাকর্মীরা ছুটে আসছেন। বিশেষ করে প্রবীণ নেতাকর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়ে। সকলেই অশ্রুসিক্ত চোখে প্রার্থনা করছেন, প্রিয় নেত্রীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার পার্শ্ববর্তী রূপগঞ্জ থেকে আসা বিএনপি সমর্থক সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের আপসহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের মা। দেশের জন্য তাকে আরও দীর্ঘ সময় প্রয়োজন ছিল। আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।

বাড্ডার বেরাইদের মোড়লপাড়া থেকে আসা মোহাম্মদ নাসির যোগ করেন, সকালে নেত্রীর মৃত্যু খবর শুনে এখানে ছুটে এসেছি। দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, কারাবরণ করেছেন। সবকিছু থেকে মুক্তি পাওয়ার পরই না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তার জন্য আমরা মন থেকে দোয়া করি।

বেগম খালেদা জিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর দলের সংকটময় মুহূর্তে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। ১৯৮২ সালে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে যোগ দিয়ে ১৯৮৪ সালে চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

১৯৮০-এর দশকে তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সাতবার আটক ও গৃহবন্দী করা হয়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে ফের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

বেগম খালেদা জিয়া কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি স্টেট সিনেট তাকে ‘গণতন্ত্রের যোদ্ধা’ উপাধিতে ভূষিত করে। ২০১৮ সালের বিতর্কিত মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হলেও ২০২৪ সালে সকল মামলায় খালাস পান।

বিজ্ঞাপন

আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিবেশ নিস্তব্ধ হলেও দেশের মানুষ ও দলের নেতাকর্মীরা প্রিয় নেত্রীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত করার প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করছেন।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD