Logo

গুলশানে খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন স্বজন ও নেতাকর্মীরা

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:১৭
7Shares
গুলশানে খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন স্বজন ও নেতাকর্মীরা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় প্রোটোকলসহ শেষবারের মতো তার পুত্র তারেক রহমানের গুলশানের বাসভবনে পৌঁছেছে।

বিজ্ঞাপন

সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো একটি ফ্রিজিং ভ্যানে মরদেহ বহন করা হয়। হাসপাতাল থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিলেন।

ভোর থেকেই প্রিয় নেত্রীকে শেষবার দেখার জন্য তারেক রহমানের গুলশানের বাসভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। বাসভবনে পৌঁছানোর পর পরিবারের সদস্যরা মরদেহের পাশে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বিজ্ঞাপন

আজ বাদ জোহর, বেলা ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা পড়াবেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। এরপর বিকেলে শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে মরদেহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মরদেহ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে রাখা হবে। জানাজা অনুষ্ঠিত হবে সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়ে। নিরাপত্তা বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় সকল দপ্তর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে যাতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে জানাজায় অংশ নিতে পারেন।

দাফনকাজ নির্বিঘ্ন সম্পন্ন করতে জিয়া উদ্যান এলাকায় জনসাধারণের চলাচল সীমিত রাখা হবে। জানাজার সময় উপস্থিত থাকবেন খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজ সারাদেশে একদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে। দেশের সকল প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। বাদ জুমা মসজিদগুলোতে বিশেষ দোয়া এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

বিএনপি তাদের দলীয় প্রধানের মৃত্যুতে সাত দিনের শোক কর্মসূচি পালন করছে। এর অংশ হিসেবে দলীয় কার্যালয়গুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন। গুলশান ও নয়াপল্টনে শোক বই খোলা হয়েছে।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ৮০ বছর বয়সে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার অবদান অবিস্মরণীয়। ১৯৯১ সালে তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ২০১৮ সাল থেকে কারাবন্দী থাকলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাননি। দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর ২৫ ডিসেম্বর তার বড় ছেলে তারেক রহমান দেশে ফিরে আসেন। তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় মারা যান।

১৯৪৫ সালে দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করা খালেদা জিয়া ১৯৬০ সালে তৎকালীন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সংকটকালে দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তার আপসহীন নেতৃত্বের কারণে তিনি ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে খ্যাতি পান।

বিজ্ঞাপন

তার মৃত্যুতে দেশের সব স্তরে গভীর শোকের ছায়া নেমেছে। প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে রাজধানীজুড়ে মানুষ ঢলেছে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD