‘উনার মুখের ভাষা আর অন্তরের ভাষা ছিল এক’

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) চিরনিদ্রায় শায়িত হচ্ছেন। তার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে রাজধানী ঢাকায় ছুটে এসেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সর্বস্তরের মানুষ।
বিজ্ঞাপন
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার ষাটোর্ধ হাসানুর রহমান জানালেন, “খালেদা জিয়া রাজনীতিবিদ ছিলেন ঠিকই, কিন্তু দেশের মানুষকে কখনো তিনি রাজনীতির ছত্রছায়ায় রেখেননি। উনার মুখের ভাষা আর অন্তরের ভাষা সবসময় এক ছিল।” হাসানুর রহমান জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাজির ছিলেন তার মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। তার মতো লাখ লাখ মানুষ আজ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা, মানিক মিয়া এবং আশপাশের এলাকা ভেঙে দিচ্ছে ভিড়ের রেকর্ড।
সাভার থেকে আসা ৮০ বছরের সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ মোহাম্মদ রেফাতুল্লাহ বলেন, “আমার মনে হয় উনাকে স্লো পয়জন দেওয়া হয়েছে। যদি তা না হতো, এত অসুস্থ হওয়ার কথা নয়।” রেফাতুল্লাহ মুখভরে অশ্রুসিক্ত নয়নে বসে ছিলেন মোহাম্মদপুর আসাদ গেটে।
বিজ্ঞাপন
সাভারের কর্ণপাড়া থেকে আসা নুর মোহাম্মদ (৭১) জানান, “আমি শহীদ জিয়াউর রহমানের আমল থেকে বিএনপির সঙ্গে পথচলা শুরু করেছি। আজ খালেদা জিয়ার শেষ যাত্রায় এসে চোখে জল থামাতে পারছি না।”
জানাজায় নারীদের উপস্থিতিও লক্ষ্যণীয়। আশুলিয়া থেকে আসা জোসনা ইসলাম বলেন, “ম্যাডামকে অবহেলায়, অযত্নে ধীরে ধীরে মারা দেওয়া হয়েছে। তার জন্য আজ আমরা সবাই এখানে এসেছি।”
দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষরা আশু চোখে ও আবেগে ভারাক্রান্ত। ভোলার লালমোহন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন মতিন হাওলাদার। তিনি জানালেন, প্রিয় নেত্রীর মৃত্যুর সংবাদ কানে পৌঁছানোর পরই জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য তিনি ঢাকা রওনা দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: মাকে নিয়ে জানাজাস্থলে তারেক রহমান
সম্পূর্ণ সংসদ ভবন এলাকা, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং আশেপাশের সড়কগুলো লোকালয় হয়ে গেছে। প্রতিটি মোড়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনা-বিজিবি মোতায়েন, যাতে জনতার নিরাপত্তা ও যান চলাচল সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
আজকের এই জানাজা শুধু একজন নেত্রীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক আবেগঘন মুহূর্ত, যেখানে মানুষ রাজনৈতিক মতের সীমা পার করে প্রিয় নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।








