বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর কবরের জীবন নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) যা বলেছেন

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: মুমিন তার কবরে সবুজ প্রশস্ত উদ্যানে অবস্থান করবে। আর তার কবরকে ৭০ গজ প্রশস্ত করা হবে। পূর্নিমার চাঁদের আলোর মত তার কবরকে আলোকিত করা হবে।
তোমরা কি জান আল্লাহর আয়াত (তাদের জন্য রয়েছে সংকীর্ণ জীবন) কাদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছে? তোমরা কি জানো সংকীর্ণ জীবন কি?
(এখানে আল্লাহর আয়াত বলে পবিত্র কুরআনে সুরা ত্বহার ১২৪ নম্বর আয়াতের কথা বলা হয়েছে। যেখানে বর্ণিত হয়েছে—
وَ مَنۡ اَعۡرَضَ عَنۡ ذِكۡرِیۡ فَاِنَّ لَهٗ مَعِیۡشَۃً ضَنۡكًا وَّ نَحۡشُرُهٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ اَعۡمٰی
বিজ্ঞাপন
আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, নিশ্চয় তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন জমায়েত করব অন্ধ অবস্থায়। (সুরা ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সাহাবায়ে কেরাম বললেন : আল্লাহ ও তার রাসুল ভাল জানেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তাহল কবরে কাফেরের শাস্তি। যার হাতে আমার জীবন, তার শপথ করে বলছি- তাকে ন্যস্ত করা হবে ৯৯টি বিষাক্ত তিন্নিন সাপের কাছে।
বিজ্ঞাপন
তোমরা কি জানো তিন্নিন কি? তিন্নিন হল ৯৯টি সাপ। প্ৰত্যেকটি সাপের রয়েছে ৭টি মাথা। যেগুলো দিয়ে সে কাফেরের শরীরে ছোবল মারতে থাকবে, কামড়াতে ও ছিড়তে থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩১২২, মুসনাদে আহমাদ; ৩/৩৮)
পরকালের জীবনে সফল হতে চাইলে ও কবরে শাস্তি থাকতে চাইলে মুমিন হতে হবে এবং মুমিন হওয়ার জন্য যেসব গুণ অর্জন করা জরুরি তা অর্জন করতে হবে। পবিত্র কোরআনে সফল মুমিনের বেশ কয়েকটি গুণ বর্ণনা করা হয়েছে। এই গুণগুলো অর্জন করতে পারলে একজন মানুষ সফল এবং এই সফলতার বিনিময়ে তিনি চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করবেন বলে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এইগুলো হলো—
১. নামাজে আন্তরিকভাবে বিনীত হওয়া।
বিজ্ঞাপন
২. অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকা।
৩. ঠিকমতো জাকাত আদায় করা।
বিজ্ঞাপন
৪. নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করা।
৫. আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা।
৬. নিজের নামাজের পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করা।
বিজ্ঞাপন
এখানে কোরআনের বর্ণনায় মুমিনের সেই গুণগুলো তুলে ধরা হলো—
قَدۡ اَفۡلَحَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ۙ ١ الَّذِیۡنَ ہُمۡ فِیۡ صَلَاتِہِمۡ خٰشِعُوۡنَ ۙ ٢ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ عَنِ اللَّغۡوِ مُعۡرِضُوۡنَ ۙ ٣ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ لِلزَّکٰوۃِ فٰعِلُوۡنَ ۙ ٤ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ لِفُرُوۡجِہِمۡ حٰفِظُوۡنَ ۙ ٥ اِلَّا عَلٰۤی اَزۡوَاجِہِمۡ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُمۡ فَاِنَّہُمۡ غَیۡرُ مَلُوۡمِیۡنَ ۚ ٦ فَمَنِ ابۡتَغٰی وَرَآءَ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡعٰدُوۡنَ ۚ ٧ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ لِاَمٰنٰتِہِمۡ وَعَہۡدِہِمۡ رٰعُوۡنَ ۙ ٨ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ عَلٰی صَلَوٰتِہِمۡ یُحَافِظُوۡنَ ۘ ٩ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡوٰرِثُوۡنَ ۙ ١۰ الَّذِیۡنَ یَرِثُوۡنَ الۡفِرۡدَوۡسَ ؕ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ١١
নিশ্চয়ই সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ। যারা তাদের নামাযে আন্তরিকভাবে বিনীত। যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে। যারা জাকাত সম্পাদানকারী। যারা নিজ লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। নিজেদের স্ত্রী ও তাদের মালিকানাধীন দাসীদের ছাড়া অন্য সকলের থেকে, কেননা এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এ ছাড়া অন্য কিছু কামনা করলে তারাই হবে সীমালঙ্ঘনকারী।
বিজ্ঞাপন
এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাযের পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করে। এরাই হল সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফিরদাউসের মীরাস লাভ করবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে। (সূরা আল মুমিনুন, আয়াত : ১-১১)