তওবা করলে কি হারাম সম্পদ হালাল হয়ে যাবে, যা বলছে ইসলাম

জেনেশুনে অথবা না জেনে অনেকে হারামভাবে সম্পদ উপার্জন করে। পরবর্তীতে নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং অনুশোচনেবোধ জাগ্রত হয়। কিন্তু হালালভাবে যে উপার্জন করেছেন তা থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে? অথবা হারামভাবে উপার্জিত সম্পদ কী করবেন? নাকি তওবা করলেই হয়ে যাবে এবং হারাম সম্পদ হালাল হয়ে যাবে?
বিজ্ঞাপন
হারামভাবে সম্পদ উপার্জনের পর যখন কেউ নিজের ভুল বুঝতে পারে তখন প্রথম কর্তব্য হলো হারাম সম্পদ যার কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে তার কাছে তা ফেরত দেওয়া। যেমন যৌতুক ও সুদ, ঘুষের টাকা যার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে, তাকে ফেরত দিতে হবে। প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে না দিয়ে শুধু তওবা করলে উপার্জিত হারাম সম্পদ হালাল হবে না এবং শুধু তওবার মাধ্যমে কেউ হারাম সম্পদ উপার্জনের গুনাহ থেকে মুক্ত হবে না।
আর যদি হারামভাবে উপার্জিত সম্পদ ফেরত দেওয়ার কোনো সুযোগ না থাকে, তাহলে সেই হারাম সম্পদ সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে হবে। যেহেতু সেই সম্পদের প্রকৃত মালিক সে নয়, তাই তা দানের সময় সওয়াবের নিয়ত করাও জায়েজ নয়।
বিজ্ঞাপন
হালালভাবে উপার্জনের গুরুত্ব
উপার্জনের ক্ষেত্রে ইসলাম সবসময় হালাল-হারামে গুরুত্ব দিতে বলেছে। কারণ, হারাম পন্থায় উপার্জন করলে বরকত নষ্ট হয়ে যায়। যার উপার্জন হারাম তার সারা জীবনই ধ্বংসের মুখে। কারণ, তার খাবার-দাবার, পোশাক সবই হারাম উপার্জনের এমনকি সন্তান-সন্ততির শরীরও হারাম খাবারে পূর্ণ। এক কথায় তার পুরো জীবন প্রতিষ্ঠিত হারামের ওপর। এমন ব্যক্তি অঢেল সম্পদ উর্পাজন করলেও বরকত থেকে বঞ্চিত। আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত।
তাই হালাল উপার্জনে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, এতে রয়েছে বরকত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে থাকে তাকে এর মধ্যে বরকত দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস, ২৩১১)
বিজ্ঞাপন
হালাল রিজিক অনুসন্ধান করা আবশ্যক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘অন্যান্য ফরজ কাজ আদায়ের সঙ্গে হালাল রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরজ।’ (বায়হাকী, হাদিস, ৪৬০)।
হালাল পন্থায় রিজিক অনুসন্ধানে বিশেষ সওয়াব অর্জন হয়। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পুরুষের জন্য তার উপার্জনের কারণে সওয়াব রয়েছে’। (বুখারি, হাদিস, ১৪২৫)। নিজ হাতে উপার্জন করা নবীদের সুন্নত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নিজ হাতে উপার্জিত খাবারের থেকে উত্তম খাবার কখনো কেউ খায় না। আল্লাহর নবী দাউদ আলাইহিস সালাম নিজ হাতে উপার্জন করে খেতেন।’ (বুখারি, হাদিস ২০৭২)।








