১০ লাখ টাকা ঘুষে কাজ দেন প্রকৌশলী খালেক

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইলেকট্রিক্যাল-মেকানিক্যাল (ই-এম) বিভাগ-৩ এ আবারও ঘুষ ও দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। এবার সরাসরি ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল খালেক আকন ঠিকাদারের কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করছেন।
বিজ্ঞাপন
ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ঠিকাদার প্রকৌশলী আবদুল খালেক আকনের অফিস কক্ষে ঢুকে হাতে টাকা দিয়ে বলছেন “স্যার, আপনি ১০ লাখ চেয়েছিলেন, ১০ লাখই দিয়েছি স্যার। এখানেতো আহামরি কোনো টাকার মাল নাই স্যার। মালটা আপনি পৌঁছে দিয়েন। আপনি তো আপনারটা বুঝে পেয়েছেন।” ভিডিওটি ধারণ করেন ঠিকাদারের পক্ষের এক ব্যক্তি, যিনি গোপনে পুরো ঘুষ লেনদেনের মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি করেন।
ঘটনার তদন্তে জানা গেছে, সম্প্রতি স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে খ্যাত প্রকৌশলী আবদুল খালেক আকন ঘুষ ছাড়া কিছুই বুঝেন না। ঘুষ দিলে পছন্দের কাজ নিতে পারেন ঠিকাদাররা। নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. ময়নুল হক ও উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল খালেক আকন দুর্নীতিবাজ হলেও পুরো বিভাগের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে। কিভাবে তারা প্রকোশ্য ঘুষ দেনদেন করেন। দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প অনুমোদন, বিল ছাড় ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্য চলে। অনেক ক্ষেত্রে কাজ না করেই বিল উত্তলনের অভিযোগ রয়েছে।
একজন প্রকৌশলীর এমন অনৈতিক ও বেআইনি কর্মকান্ড শুধু একটি দপ্তর নয় পুরো রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এই ভিডিও তদন্তে করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ঠিকাদারদের এক অংশের। তারা নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ বিভাগীয় প্রকৌশলীদের কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্ত প্রকৌশলী আবদুল খালেক আকন বলেন, আমি যা করি নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের নির্দেশে করি। স্যার যা বলেছে ঠিকাদার মনসের সঙ্গে সেই ভাবে কথা হয়েছে। এর বাইরে কিছু নয়। এটা ঘুষের টাকা না। পুরতন মালামাল ক্রয়ের টাকা। সরকারি টাকা চালান রশিদের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দিতে হয় হাতে নিলেন কেনো এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নগদ টাকা না নিলে ব্যাংকে জমা দিবো কিভাবে। ঠিকাদার একজন পুরতন মালামাল ক্রয়কারী, তার সঙ্গে কথা বললে জানতে পারবেন। যে ঠিকাদার কাজ পেয়েছেন সে বাংলাদেশে নাই। তিনি আওয়ামী লীগের লোক বিদেশে চলে গেছেন। তিনি আরো বলেন, যে টাকা দিয়েছেন তার নাম মনস। তার সঙ্গে কথা বললে জানতে পারবেন। আমি জানি না, কোনো আমার নাম সবাই বলছে। সংবাদ ছাড়বেন না, ঠিকাদারের প্রতিনিধি আপনার সঙ্গে দেখা করবে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে গনপূর্তের ই-এম বিভাগ-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. ময়নুল হক এর মুঠো ফোন কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি ক্ষুর্দে বার্তা পাঠিয়ে উত্তর মেলেনি।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়রকে মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি ক্ষুর্দে বার্তা পাঠিয়ে উত্তর মেলেনি।