সাকিবের ফেরা নিয়ে যা বল্লেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

বাংলাদেশ জাতীয় দলের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ঘিরে আবারও নতুন বিতর্ক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন— সরকারের পক্ষ থেকে সাকিবের জন্য কোনো পথ খোলা রাখা এখন আর সম্ভব নয়। যা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
‘ক্রিকবাজ’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ মাহমুদ তার কঠোর অবস্থানের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, আমার পক্ষে এখন আর ওই পথটা খোলা রাখা সম্ভব নয়। কারণ, আমার প্রতিশ্রুতির জায়গা আছে, যেখানে আমাকে জবাবদিহিতা করতে হবে। নিজের বিবেকের কাছেও জবাবদিহিতা করতে হবে।
সাক্ষাৎকারে সাকিবের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক গুরুতর অভিযোগের কথা উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, ফিন্যানশিয়াল ফ্রড এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেওয়াও বিতর্ককে আরও তীব্র করেছে।
বিজ্ঞাপন
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কিছু করছে না। বরং সাকিবের নিজের কর্মকাণ্ডই তাকে এই অবস্থানে এনেছে।
এই প্রসঙ্গের পর উঠে আসে মাশরাফির নাম। এই বিষয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু মাশরাফি বিন মুর্তজার বিষয়ে এমন কিছু আছে কি না, এমন আমার জানা নেই বা আমার চোখে পড়েনি। আমার জানামতে উনি ওনার যে রাজনৈতিক অবস্থান ছিল সেটা থেকেও আবার সরে এসেছেন, ফেসবুকে উনি স্পষ্ট করেছেন বলে আমার মনে পড়ে।
মূলত মাশরাফি তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিতটা ফেসবুকে দেননি। দিয়েছিলেন গেল বছরের আগস্টে এক সাক্ষাৎকারে। সেখানে তিনি পরিষ্কার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাজনীতিতে আর নেই। বলেছিলেন, যখন রাজনীতিতে ছিলাম, ক্রিকেট বোর্ডে থাকার চেষ্টা করিনি। এখন রাজনীতিতে নেই, এখন যদি বোর্ডে থাকার চেষ্টা করি বা থাকতে চাই, তাহলে কেমন হয়ে যায় না! রাজনীতি করার বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেছেন অতীতকালে।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া এরপরে তার কর্মকাণ্ড ইঙ্গিত করছে তিনি রাজনীতির সঙ্গে আর নেই। শেষ এক বছরে তিনি ১৪টি ফেসবুক পোস্ট করেছেন নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে। তার একটিও আওয়ামী লীগ সম্পর্কিত নয়। পক্ষান্তরে সাকিব শেষ এক বছরে জুয়ার ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নিয়ে পোস্ট করেছেন একাধিক।
তবে সাকিবের মতো অপরাধ যদি করে থাকেন মাশরাফি, তাহলে বিচার হওয়ার সম্ভাবনাটিও উড়িয়ে দেননি ক্রীড়া উপদেষ্টা। আসিফ মাহমুদের কথা, এর বাইরে যদি উনি রাষ্ট্রীয় আইনে তিনি কিছু করে থাকেন, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতেই পারে। ওনার বিষয়টা আলোচনায় নেই, কারণ উনি তো অবসর নিয়েছেন অনেক আগে। খেলার সাথে, সংশ্লিষ্ট জিনিসের সাথে তিনি আর ইনভলভ হন নাই। যে কারণে সেভাবে আলোচনায় আসেনাই। বাকিদেরটা যেভাবে রেলেভেন্ট ছিল, তারটা সেভাবে রেলেভেন্ট ছিল না আরকি।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, সাকিব আল হাসান এখনও তার অবস্থান পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত দেননি। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রয়েছেন। ক্রীড়া উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর, সাকিবের ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে নতুন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।