যে কারণে জাতীয় দলের চাকরি ছাড়লেন সালাউদ্দিন

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন কোচিং প্যানেল থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন দুই টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর তিনি আর জাতীয় দলের সঙ্গে থাকবেন না।
বিজ্ঞাপন
২০২৪ সালের নভেম্বরে সালাউদ্দিনকে সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে সালাউদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিসিবি। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানান, ‘আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর তিনি পদত্যাগ করতে চান বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা অভ্যন্তরীণ আলোচনা করব।’
বিজ্ঞাপন
সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, কোচিংয়ের কাজটি তিনি আর আগের মতো উপভোগ করছেন না। তার ভাষায়, “কোচিং করানোটা আমার উপভোগের জায়গা। মাঠই আমার সব। যদি কোনো কারণে সেটা উপভোগ না করতে পারি, তাহলে সরে যাওয়াই ভালো। আমি আমার দায়িত্বটা আর উপভোগ করছি না।”
যদিও তিনি পদত্যাগের নির্দিষ্ট কারণ প্রকাশ করতে চাননি, তবে জানিয়েছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে তার কোনো সমস্যা নেই। তবে বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের সম্পর্ক বেশ ঠান্ডা হয়ে গেছে।
কেন উপভোগ করছেন না, সে ব্যাপারে অবশ্য তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। তবে জানিয়েছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে কাজ করতে তার কোনো সমস্যা নেই। অবশ্য বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান নাজমূল আবেদীনের সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে কথাবার্তাই নাকি বন্ধ সালাউদ্দিনের! জাতীয় দল সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখভাল করে বিসিবির এই ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগই।
বিজ্ঞাপন
গত সোমবার হঠাৎ করেই মোহাম্মদ আশরাফুলকে আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ নিয়োগ করে বিসিবি। তাই সালাউদ্দিনের এই পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পেছনে বড় কারণ মনে করা হচ্ছে আশরাফুলকে নতুন ব্যাটিং পরামর্শক নিয়োগ দেওয়াকে। তবে এ ব্যাপারে সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, কোচিং স্টাফে আশরাফুলের অন্তর্ভুক্তিকে তিনি স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন।
ফারুক আহমেদ বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর সালাউদ্দিনের বেশ ভূয়সী প্রশংসা করেই তাকে জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেখা গেছে ব্যাটিং কোচের অনুপস্থিতিতে সালাউদ্দিনকেই বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে ব্যাটিং কোচের কাজ করতে হয়েছে। কাগজ-কলমে ব্যাটিং কোচ না হওয়া সত্ত্বেও ব্যাটিং ব্যর্থতার দায় দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া সর্বশেষ আফগানিস্তান সিরিজে নুরুল হাসান সোহানকে দিয়ে উইকেটকিপিং না করিয়ে জাকের আলী অনিকের উইকেটকিপিং করানোর দায়ও তাকে দেওয়া হয়েছে। অথচ, সালাউদ্দিন চেয়েছিলেন নুরুলই কিপিং করুক। কিন্তু অধিনায়ক জাকের চেয়েছেন কিপিং তিনি করবেন। সালাউদ্দিনের অনুরোধ সত্ত্বেও প্রধান কোচ ফিল সিমন্স তাতে হস্তক্ষেপ করেননি।
এর আগে, ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী ও ফিল্ডিং কোচ ছিলেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। পরবর্তীতে ২০১০–১১ সালে বিসিবির ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমির বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জাতীয় দলের দায়িত্ব ছাড়ার পর তিনি আবারও ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আসন্ন বিপিএলেও কোনো দলের কোচ হিসেবে দেখা যেতে পারে তাকে।
বিজ্ঞাপন








