অচল ব্রিজ, অচল জীবন: রাস্তা না থাকায় ভেঙে যাচ্ছে বিয়ে

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের ঘোড়দৌড় মাদ্রাসা সংলগ্ন নতুনপাড়া এলাকায় লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ব্রিজ এখন পরিণত হয়েছে জনদুর্ভোগের প্রতীকে।
সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে কয়েকটি গ্রামের দুই হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন ভোগান্তি নিয়ে জীবন-যাপন করছেন। রাস্তার কারণে ভালো বিয়ে ভাঙছে এলাকার ছেলে-মেয়ের এ অভিযোগ জানালেন স্থানীয়রা।
অল্প বৃষ্টিতেই করতোয়া নদীর পূর্ব পার্শ দিয়ে নেমে আসা পানিতে ব্রিজসংলগ্ন রাস্তা প্লাবিত হয়। বর্ষা এলেই পুরো এলাকা জলাবদ্ধতায় ডুবে যায়। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, থমকে যায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
জাকারিয়া নামে এক বাসিন্দা বলেন, “রাস্তা না থাকায় আমাদের এই পাড়ার মেয়েদের বিয়ে পর্যন্ত ভেঙে যাচ্ছে। সুইচ গেট খুলে দিলে পানি কমবে, আর দ্রুত সংযোগ সড়ক তৈরি হলে আমাদের কষ্টের অবসান হবে।”
সাইফুল ইসলাম কবিরাজ বলেন, “বৃষ্টির পানি নামলে আমরা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। আত্মীয়-স্বজন আসতে পারে না, এমনকি ছেলে-মেয়ের বিয়েও নষ্ট হয়ে যায়।”
আলহাজ্জ হারুনুর রশিদ বলেন, “নামাজে যাওয়া, বাচ্চাদের স্কুল-মাদ্রাসায় যাওয়া, এমনকি কবরস্থানে লাশ নেওয়ার সময়ও আমরা সমস্যায় পড়ি। রাস্তা হলে আমাদের অনেক সুবিধা হতো।”
স্থানীয় নারী বাসিন্দারা জানালেন, অস্থায়ী বাঁশের চরাটে উঠতে তাদের ভীষণ কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগী পারাপারেও তৈরি হয় নানা বিড়ম্বনা। বাচ্চাদের স্কুল-মাদ্রাসায় যাওয়া অনেক কষ্টের।
এলাকার মেম্বার পদপ্রার্থী আফজাল হোসেন বলেন, “মানুষ বাঁশের চরাটে পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। সংযোগ সড়কের ভরাট কাজ দ্রুত শেষ না হলে দুর্ভোগ বাড়তেই থাকবে।”
তবে আশার কথা শোনালেন খামারকান্দি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান মিলন। তিনি বলেন, “ব্রিজটি নির্মাণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে। এ কারণে মাটি ভরাট সম্ভব হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।”
একই সুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল জাব্বারও জানান, “ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে। সংযোগ সড়ক ভরাটের কাজ বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিলম্বিত হলেও খুব শিগগিরই শেষ হবে।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য থেকে জানা যায়, ত্রাণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রিজটি পূর্ণতা পেলে বদলে যাবে এলাকার চিত্র। তারাও জানালেন দ্রুতই শেষ হবে মাটি ভড়াটের কাজ।
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
