Logo

কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ

profile picture
জেলা প্রতিনিধি
গাজীপুর
২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৩৯
5Shares
কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ
ছবি: প্রতিনিধি

কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ, ভুক্তভোগীদের ঘোষণা—গাড়ি চলবে না, চললে লাশের ওপর দিয়েই চলবে।

বিজ্ঞাপন

টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল ও কাশিমপুর ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত নামজারি, মিথ্যা মামলা, জাল খতিয়ান তৈরি, ভুয়া প্রতিবেদন দাখিল এবং নথি গায়েব করার অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে গাজীপুরের গোবিন্দবাড়ি মৌজার ৪৮টি পরিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

তারা কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ করে মাটিতে বসে ও শুয়ে পড়ে বলেন—গাড়ি চলবে না, যদি চলে তবে আমাদের লাশের ওপর দিয়েই চলবে।

ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষে বানু বেগম জানান, তাদের ১১৪২০৯৫৭ নম্বর নামজারি আবেদনটি কোনো কারণ ছাড়াই টানা ৯ মাস ধরে আটকে রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ মোকদ্দমা ৩২৮/২৫–এর প্রতিবেদন চার মাস ঝুলিয়ে রেখে পরে ভুয়া তথ্য দেখিয়ে ৮৬৭৯৫৯৭৯৫ নম্বর নামজারি আবেদন বাতিল করা হয়। অথচ পূর্বের সরকারি রেকর্ড ১৬৫৬০/০৯–১০ নথিতে ১৩৫ শতাংশ জমি অবশিষ্ট থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলের সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম ও কাশিমপুর ভূমি অফিসের কিছু কর্মকর্তা ভূমিদস্যু হযরত–মান্নান গংয়ের সঙ্গে যোগসাজশ করে ৪৮ পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তি দখলের সুযোগ তৈরি করছেন।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগকারীরা জানান, গোবিন্দবাড়ি মৌজার নামে ২০১০ ও ২০১২ সালের দুটি এসএ ১৫৪ নম্বর খতিয়ান এবং ১৯৮৬ সালের দুটি দলিল রেকর্ড রুম ও সাব–রেজিস্ট্রি অফিসে আদৌ নেই। কিন্তু এই জাল কাগজপত্রই হযরত গং বিভিন্ন মোকদ্দমায় প্রদর্শন করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আরও অভিযোগ রয়েছে—২০১০ সালে জব্দ করা একটি জাল এসএ খতিয়ান টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল অফিসের নথি থেকে রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে, যা সিন্ডিকেটের যোগসাজশ ছাড়া সম্ভব নয়।

এ ছাড়া কাশিমপুর ভূমি অফিসের প্রাক্তন নায়েব আব্দুল লতিফ ৩০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে অবসর নেওয়ার পরও ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত অফিসের আইডি ব্যবহার করে গোপনে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পুরোনো তারিখ বসিয়ে বিভিন্ন নথি পরিবর্তন ও কারসাজি করেছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

বিজ্ঞাপন

তারা আরও জানান, ৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে সকাল ১০টায় নোটিশ দিয়ে একই দিনে ভোর ৩টায় বিরোধপূর্ণ জমিতে হাজির হতে বলা হয়—যা ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ছাড়া কিছুই নয়।

পরিবারগুলো জানান, তিনটি মোকদ্দমায় আদালত তাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। কিন্তু গত দুই বছর ধরে রেকর্ড সংশোধন অজুহাতে আটকে রাখা হয়েছে। এই সুযোগে প্রতিপক্ষরা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে একাধিকবার হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেছে।

তারা বলেন, জাল কাগজপত্র জমা দেওয়া হলেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেগুলোকে জাল, অবৈধ ও অকার্যকর ঘোষণা করেছেন। তবুও টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলের সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম সেই জাল নথিকেই বৈধতা দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন, যা দুর্নীতির প্রকাশ্য উদাহরণ।

বিজ্ঞাপন

৪৮টি পরিবার দ্রুত নামজারি নিষ্পত্তি, গায়েব হওয়া নথির তদন্ত, জাল দলিল প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের অপসারণ ও শাস্তি এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তারা বলেন, প্রশাসন চাইলে এই সমস্যার সমাধানে ৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না, কিন্তু বছরের পর বছর ধরে তারা হয়রানি, প্রতারণা ও দখলচেষ্টার শিকার হয়ে আসছেন।

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD