রাস্তা ছাড়াই ব্রিজ নির্মাণ: চরাঞ্চলে কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় জনবসতি ও সংযোগ সড়ক না থাকা চরাঞ্চলে কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণকে ঘিরে সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহারের প্রশ্ন উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্পটি বাস্তব প্রয়োজন বিবেচনা না করেই গ্রহণ করা হয়েছে, যা জনস্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
জানা গেছে, উপজেলার আওনা ইউনিয়নের ঘুইঞ্চা আওনার চরে যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২২–২৩ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হয়।
এতে প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ ৭৫ হাজার ১১৪ টাকা ব্যয়ে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এবিএম ফয়সাল কনস্ট্রাকশন। ইতোমধ্যে একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে এবং অপরটির কাজ চলমান রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: বড়লেখায় দুই দিনে ৭ ভারতীয় নাগরিক আটক
জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে যায় এবং তখন নৌকাই একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। শুষ্ক মৌসুমে তারা ফসলি জমির আইল ব্যবহার করে চলাচল করেন।
স্থানীয়দের মতে, ব্রিজ নির্মাণের আগে সেখানে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা জরুরি ছিল।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া বর্তমানে নির্মিত ব্রিজে পৌঁছাতে নৌকায় করে অন্তত দুটি নদী পার হতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যেখানে প্রকৃত অর্থে ব্রিজ প্রয়োজন, সেখানে কোনো উদ্যোগ না নিয়ে জনমানবহীন স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। একইসঙ্গে কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. মকবুল হোসেন বলেন, তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আরিফুল ইসলামের নির্দেশনা ও উপস্থিতিতেই কাজ সম্পন্ন করছেন।
তবে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা ও মান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন,
বিজ্ঞাপন
কাজগুলো স্যারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শওকত জামিল বলেন, প্রকল্পটি মূলত ২০২১–২২ অর্থবছরে প্রস্তাব পাঠানো হয় এবং ২০২২–২৩ অর্থবছরে কাজ শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শন করে স্থান নির্ধারণ করেছিলেন। বর্তমানে আমরা কাজের তদারকি করছি। কাজের মান নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সচেতন মহলের মতে, প্রকল্প পরিকল্পনা, স্থান নির্বাচন ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় দায়িত্বশীলদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তাদের দাবি, প্রকৃত জনস্বার্থ বিবেচনা না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তা তদন্তের আওতায় এনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।







