সাজেকসহ পার্বত্য পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকের রেকর্ড ভিড়

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বড়দিন এবং একযোগে পড়া বার্ষিক স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরকারি ছুটিকে ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রামে নেমেছে পর্যটকের ঢল।
বিজ্ঞাপন
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সাজেক ভ্যালি এখন পর্যটকে একাকার। শীতের আমেজ, মেঘ–কুয়াশায় মোড়ানো পাহাড় আর নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন সাজেকে।
রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ভ্যালিতে বর্তমানে প্রায় সব হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ শতভাগ বুকিং রয়েছে। পর্যটকদের চাপে অনেককেই অগ্রিম বুকিং ছাড়া থাকার ব্যবস্থা পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত সাজেকের রুইলুইপাড়া, কংলাকপাড়া, হেলিপ্যাড এলাকা ও আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্র জানায়, শীত মৌসুমের শুরুতেই বড়দিন ও দীর্ঘ ছুটি একসঙ্গে পড়ায় চলতি বছরে সাজেকে পর্যটকের উপস্থিতি অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর, সূর্যাস্তের দৃশ্য আর পাহাড়ি সংস্কৃতির ছোঁয়া পর্যটকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করছে।
সাজেকের পাশাপাশি খাগড়াছড়ি জেলার আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ পার্ক, দীঘিনালা উপজেলার নকশী পল্লী, সেলফি রেস্টুরেন্ট, ঝুলন্ত সেতু ও আশপাশের দর্শনীয় এলাকাগুলোতেও পর্যটকের ব্যাপক সমাগম লক্ষ্য করা গেছে। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও ভ্রমণপ্রেমী তরুণদের পদচারণায় এসব স্থান দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নিয়েছে।
পর্যটকের চাপ বাড়ায় পাহাড়ি অঞ্চলের হোটেল-মোটেল, পরিবহন, রেস্তোরাঁ, স্থানীয় গাইড ও হস্তশিল্প ব্যবসায় নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘ সময়ের মন্দাভাব কাটিয়ে পর্যটন মৌসুমে এ ধরনের ভিড় তাদের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিজ্ঞাপন
তবে পর্যটকের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় কোথাও কোথাও যানজট, আবাসন সংকট ও অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে পরিবেশগত শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটন এলাকাগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং জরুরি সেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
সব মিলিয়ে বড়দিন ও বার্ষিক ছুটির সুবাদে পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলো এখন উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নিয়েছে। এই পর্যটন জোয়ার দেশের পাহাড়ি অঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটন শিল্পে নতুন গতি সঞ্চার করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।








