কাবুলে নারীদের বিক্ষোভে তালেবানদের গুলি
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মারধর, লাঠিপেটা ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আফগানিস্তানের কাবুলে নারীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করেছে তালেবান যোদ্বারা। আফগানিস্তানে গত দুই দশকে নারীদের সামান্য যেসব অর্জন, গত বছরের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলের পর সেগুলো কেড়ে নিয়েছে তালেবান।
এরই প্রেক্ষিতে শনিবার (১৩ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভবনের সামনে এই বিরল বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এই বিক্ষোভে প্রায় ৪০ জন নারী অংশ নেন। তাদেরকে ‘রুটি, রুজি ও স্বাধীনতা’ স্লোগান দিতে শোনা যায়। খবর ডয়চে ভেলের।
ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এ সময় কয়েকজন নারী দৌড়ে পার্শ্ববর্তী দোকানে আশ্রয় নিলে তাদের ধাওয়া করে বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করে তালেবান যোদ্ধারা।
বিক্ষোভকারীদের বহন করা ব্যানারে লেখা ছিল ‘১৫ আগস্ট কালো দিন’। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারীরা কাজ করার ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণের অধিকারের দাবি জানান। তারা ‘ন্যায়বিচার চাই/অবহেলায় আমরা ক্ষুব্ধ’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। এ সময় অনেক বিক্ষোভকারীই নিকাব পরিহিত ছিলেন না।
গত কয়েক মাসের মধ্যে নারীদের এটাই ছিল প্রথম বিক্ষোভ। এই কর্মসূচির খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মীদেরও মারধর করেছে তালেবান যোদ্ধারা।
ক্ষমতা দখলের পর কঠোর ইসলামিক বিধিবিধানের শিথিল ধারা মেনে চলার অঙ্গীকার করেছিল তালেবান। তালেবান ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় কঠোর শরিয়াহ আইন অনুসরণ করেছিল।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও আগের আমলের অনেক বিধিনিষেধ আবারও আরোপ করেছে তালেবান। হাজারো কিশোরীর মাধ্যমিক স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান সরকার। অনেক সরকারি চাকরিতে নারীদের ফিরতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
দীর্ঘ সফরে নারীদের একা ভ্রমণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা কেবল পুরুষদের থেকে পৃথক দিনে রাজধানীর বাগান ও পার্কগুলোতে বেড়াতে যেতে পারেন।
মে মাসে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা ও তালেবানপ্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা জনসমাগমস্থলে নারীদের বোরকা পরিধান করে চলাফেরা করার নির্দেশ দেন।
শুরুতে কিছু আফগান নারী এসব বিধিনিষেধের বিরোধিতা করেন এবং ছোটখাটো বিক্ষোভের আয়োজন করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তাদের নেত্রীদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তালেবান। তবে তাদের আটকের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।
এসএ/