জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে যা বললেন জায়েদ খান
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
বিতর্ক
যেন পিছু ছাড়ছেনা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চিত্রনায়ক
জায়েদ খানের। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন একটি হিন্দু পরিবার।
জায়েদ
খানের বিরুদ্ধে পিরোজপুর সদরে এক হিন্দু পরিবারের বাড়ি ও ক্লিনিক দখলের অভিযোগে মানববন্ধন
করেন ওই ভুক্তভোগী পরিবার।
শুধু
জমি বা স্থাপনা দখলই নয়, তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে হত্যার হুমকি, গুম ও মানুষ পেটানোর
অভিযোগও। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবার মুখ খুললেন শিল্পী সমিতির সাবেক এ সাধারণ সম্পাদক।
রবিবার
(১৩ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান জায়েদ খান।
ভিডিও
বার্তায় তিনি বলেন, যে বিষয়টা আজ দেখলাম তা খুবই দুঃখজনক ও হাস্যকর। যারা নির্বাচনে
আমাকে হারানোর জন্য হত্যা মামলার আসামি করতে চেয়েছিল তারাই আজ প্রেসক্লাবে এসব করিয়েছে।
একটা পরিবারকে টাকা দিয়ে পিরোজপুর থেকে এনে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে যে আমি হিন্দু
পরিবারের ক্লিনিক দখল করেছি।
জায়েদ
আরও বলেন, ওই ক্লিনিক বা জমি কোনো কিছুর সঙ্গেই আমার সম্পর্ক নেই। আমার আপন মেজো ভাই
ওই ক্লিনিকের অর্ধেকের মালিক। বাকি অর্ধেক কেনার জন্য ওই পরিবারকে টাকা পরিশোধ করা
হয়েছে। কিন্তু তারা জমি রেজিস্ট্রি না করে দিয়ে আমাদের ঘুরাচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি
মামলা আদালতে চলমান আছে। ওই জমির মালিকানা নিয়ে আমার ভাই ও তাদের নিজস্ব সমস্যা এটি।
এর সঙ্গে আমার কিছুই জড়িত নেই। সেখানে ইচ্ছে করে আমাকে জড়িত করা হচ্ছে। মানুষ কতটা
নীচু হতে পারলে এ কাজ করতে পারে।
এদিকে
জায়েদ খানের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি, জমি দখল, মারধরের বিভিন্ন অভিযোগে রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে একটি ভুক্তভোগী পরিবার।
মানববন্ধনে
ভুক্তভোগী পরিবারের বলেন, ‘অন্তরজালা’ সিনেমার শুটিং করার কথা বলে তাদের বাড়ি
ও ক্লিনিক দখল করেন জায়েদ খান। ক্লিনিকটি ৪০ শয্যার বলে জানা গেছে।এছাড়া পরিবারটিকে
এলাকা ছাড়ার হুমকিও দেন তারা। ওই পরিবারকে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে
অভিযোগ করেন তারা। এদিকে থানা পুলিশের কাছে বিচার না পেয়ে প্রধনামন্ত্রীর কাছে বিচার
চেয়েছেন ভুক্তভোগী ওই পরিবার।
মানববন্ধনে
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, ‘অন্তর জ্বালা’
সিনেমার শুটিংয়ের কথা বলে পিরোজপুর সদরে হিন্দুদের জমি ও ক্লিনিক দখল করেন জায়েদ খান।
এর সঙ্গে জড়িত আছেন জায়েদ খানের ভাই ওবায়দুল হক পিন্টু ও শহীদুল হক মিন্টু। ক্লিনিকটি
৪০ শয্যার বলে জানা গেছে।
এক
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগকারীরা জানান, ২০১৬ সালের ২১ মার্চ রাত ২টায় পাঁচতলা ভবনের
পঞ্চম তলায় জায়েদ খান ও তার কিছু অস্ত্রধারী লোক গীতা রানী ও তার পরিবারের ওপর হামলা
চালান। এ সময় তারা জোরপূর্বক টাকাপয়সা ও ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্স লুট করে নিয়ে যান।
এসব লুট করার আগে জায়েদ খান গীতা রানীদের মারধর করেন এবং তার স্বামীকে পিটিয়ে ঝিনাইদহে
রেললাইনের ওপর ফেলে রেখে চলে যান।
বিজ্ঞপ্তিতে
আরও বলা হয়, এ বিষয়ে ২০১৬ সালের ২৬ মার্চ তিনি একটি এজাহার দায়ের করেছিলেন। এরপর থেকেই
জায়েদ খান তিনি ও তার পরিবারকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। এ ছাড়া পাঁচতলা বাড়িটির
বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। বর্তমানে তারা ওই বাড়িতে থাকতে পারছেন
না।
২০১৮
সালের ১৫ এপ্রিল এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হলে মহামান্য হাইকোর্ট
আমাদের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। বর্তমানে
আমরা ঢাকায় অবস্থান করছি, তবে আমাদের পিরোজপুরের বাসার সব মালামাল জায়েদ খান ও তার
গং লুট করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে গত ৬ জুন ২০১৮ সালে করা মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। মামলা
নম্বর ০৯, ১৮৫/১৮।
আমরা
ভুক্তভোগী পরিবার ভূমিদস্যু জায়েদ খান গংয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে সবার সহযোগিতা কামনা
করছি।
ওআ/