‘ভণ্ডপীর’ ইকবালের আস্তানায় চলত অবৈধ কার্যকলাপ: র‌্যাব


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪২ অপরাহ্ন, ১৯শে জুন ২০২৩


‘ভণ্ডপীর’ ইকবালের আস্তানায় চলত অবৈধ কার্যকলাপ: র‌্যাব
ছবি: র‌্যাব মিডিয়া উইং

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, কুমিল্লার দেবিদ্বারে লিচু দেয়ার প্রলোভনে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত কথিত পীর মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী ওরফে মাওলানা প্রফেসর মো. ইকবাল হোসাইন শুদ্ধভাবে আরবিই পড়তে পারেন না। নিজের ধর্মীয় বিষয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পর্যন্ত নেই তার। রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানতে পেরেছে র‌্যাব।


সোমবার (১৯ জুন) কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।


তিনি জানান, গত ২ জুন কুমিল্লার দেবিদ্বারে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।


খন্দকার আল মঈন জানান, র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১১ এর যৌথ অভিযানে গত রাতে রাজধানীর মিরপুরে অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষক ভণ্ডপীর মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী ওরফে মাওলানা প্রফেসর মো. ইকবাল হোসাইনকে গ্রেফতার করা হয়।


র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন ভুক্তভোগী শিশুটি ইকবালের বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে গেলে তিনি লিচু দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার আস্তানায় ডেকে নিয়ে যান। এরপর কৌশলে ধর্ষণ করে। 


আরও পড়ুন: লিচুর প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ, ‘ভণ্ডপীর’ ইকবাল গ্রেফতার


খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, ইকবাল কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার তথাকথিত একজন পীরের মুরিদ এবং স্বনামধন্য একটি দরবার শরীফের অনুসারী ও প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে দাবি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ তার বাড়িতে একটি আস্তানা গড়ে তোলেন। তার ধর্মীয় বিষয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকায় তিনি শুদ্ধভাবে আরবি পড়তে পারতেন না। বিধায় বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ে ও মোবাইলে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল শুনে কিছু ধর্মীয় বিষয় মুখস্ত করে সপ্তাহে একদিন তার আস্তানায় জমজমাট আসর বসিয়ে ধর্মীয় বিষয়ে বক্তব্য দিতেন। 


তিনি জানান, নিজ আস্তানার বাইরেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতেন। তার আস্তানায় আগত লোকজন মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ করত বলে জানা যায়। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইকবাল নিজের এবং তার আস্তানার বিভিন্ন আইডি ও পেজ খুলে আস্তানার প্রচার-প্রচারণা করে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতেন। কয়েকবার অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হলে স্থানীয়রা তাকে হাতে নাতে ধরেন। তার অন্ধভক্তরা তাকে হাদিয়া স্বরূপ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ অলংকার ও গবাদীপশু প্রদান করতে; যা নিজের ও নিজের আস্তানার জন্য ব্যয় করতেন বলে জানা যায়।'


র‍্যাব জানায়, ইকবাল কুমিল্লার একটি স্থানীয় কলেজ থেকে স্মাতক সম্পন্ন করে বিভিন্ন কলেজে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকতা করতেন এবং স্থানীয় লোকজন তাকে প্রসেফর বলে ডাকতেন। একপর্যায়ে স্থায়ী কোনো চাকরি না পেয়ে সহজে টাকা উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে স্থানীয় জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে কথিত পীর হিসেবে দাবি করেন।


জেবি/ আরএইচ/