মুন্সীগঞ্জ-১: নৌকা-ট্রাক-কুলা প্রতীকের গণসংযোগ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:১৯ অপরাহ্ন, ২৭শে ডিসেম্বর ২০২৩


মুন্সীগঞ্জ-১: নৌকা-ট্রাক-কুলা প্রতীকের গণসংযোগ
ফাইল ছবি।

মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে (শ্রীনগর-সিরাজদিখান উপজেলা) ৭ জানুয়ারী আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় জমে উঠেছে নির্বাচনের ভোটের মাঠ। অপরদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের উস্কানীমূলক বিভিন্ন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। 


ব্যক্তিগত এসব আক্রমণমূলক বক্তব্য দিয়ে প্রতিদ্বদ্বী প্রার্থীকে হেয়পন্ন করার পাশাপাশি স্থানীয়দের নৌকার বিপরীতে ভোট না দেওয়ার জন্য উস্কানীমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে বলপ্রয়োগের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে সাধারণ ভোটারদের মাঝে এক ধরণের ভয়ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কর্মী-সমর্থকরা বলছেন, যেখানে আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য ঘোষণা দিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: যা যা আছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে


ভোটের ক্ষেত্রেও কর্মীরা যাকে খুশি ভোট দিতে পারবেন বলে দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় নেতারা মিডিয়াতে বলছেন। তার পরেও স্থানীয় অতি উৎসাহী আওয়ামী লীগের কিছু নেতার উস্কানীমূলক কথাবার্তায় মনে হচ্ছে আমরা আওয়ামী লীগের বাহিরে চলে গেছি, রাজাকার হয়ে গেছি। এটা অতিদুঃজনক। অথচ এসব নেতারা গত ইউপি নির্বাচনে দলের কঠোর নির্দেশনা অমান্য করে নৌকার বিরোধীতা করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন। 


এমন অসংখ্য প্রামাণ রয়েছে। তার প্রমাণ মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের দুটি উপজেলা গেল ইউপি নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবির বিষয়ে লক্ষ্য করলেই সব পরিস্কাহয়ে যাবে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা এ ধরণের উস্কানীমূলক বক্তব্য থেকে সংশ্লিষ্টদের বিরত থাকার আহবান করেন।এ আসনটিতে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বদ্বীতা করছেন ৩ জন নারী প্রার্থীসহ মোট ৯ জন। 


প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার সংসদ পদপ্রার্থী ও সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, একমাত্র স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবীর, বিকল্পধারার মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ মাহী বি. চৌধুরী, বিএনপির তৃণমূলের সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী অন্তরা সেলিমা হুদা, লাঙ্গলের প্রার্থী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম, বটগাছ প্রতীকের খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী আতাউল্লাহ্, আম প্রতীক নিয়ে পিপলস্ পার্টির দোয়েল আক্তার, সুপ্রিম পার্টির একতারা প্রতীকের বাউল শিল্পী লতিফ সরকার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী ডাব প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন নুরজাহান বেগম রিতা। 


তবে নির্বাচনী এলাকায় নৌকা ও ট্রাকের প্রচারণার সাথে পাল্লা দিয়ে নির্বাচনের মাঠে প্রচারণায় সরব আছে কুলা মার্কাও। এছাড়া সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থীকে ডিলেঢালাভাবে প্রচারণা চালাতে দেখা গেলেও গত সোমবার থেকে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীকে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ এলাকায় পথসভার মধ্যে নির্বাচনের প্রচারণায় নামতে দেখা গেছে। 


এছাড়া একতারা, আম, ডাব ও বটগাছ প্রতীকের প্রার্থীদের প্রচারণায় সরব দেখা না গেলেও নির্বাচনী এলাকার কোন কোন স্থানে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের পোস্টার ঝুলতে দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে নৌকা-ট্রাক-কুলার ত্রি-মুখী লড়াই হতে পারে। তবে ধারনা করা হচ্ছে এই ভোটযুদ্ধে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিনেরমূল প্রতিদ্বদ্বীতা হবে ট্রাক প্রতীক কবীরের সাথে। 


আরও পড়ুন: ভোটকেন্দ্রে না গেলে হাসরের দিন বিচার হবে: কাদের মির্জা


কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, এবার নির্বাচনের চিত্রটা ভিন্নরকম। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে আছেন। কারণ হিসেবে বলেছেন, তরুণ-যুবক প্রজন্মের ভোটারদের একটি বিশাল অংশ কবীরকে সমর্থন করেছে। এছাড়া তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর একাংশ তার হয়ে নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন তরুণ এই সাবেক ছাত্রনেতার পক্ষে। 


ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রায় ১ যুগ ধরে শ্রীনগর ও সিরাজদিখানের প্রতিটি গ্রাম-মহল্লায় গোলাম সারোয়ার কবীরের সরব উপস্থিতি রয়েছে। যে কোন সামাজিক, ধর্মীয় ও দলীয় অনুষ্ঠানে তিনি এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নির্বাচনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ঘোষণা দিলে এ আসনে কবীর প্রার্থী হয়েছে। তাই প্রিয় নেতার (স্বতন্ত্র প্রার্থী) পক্ষে কাজ করছি। ট্রাকের জণজোয়ার উঠেছে। অথচ স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতা এলাকায় উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে উৎসবমূখর নির্বাচনে ভোটারদের মাঝে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছেন। 


নৌকা সমর্থকরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় ভোটের মাঠে অনেকেই কৌশলগত বক্তব্য দিয়ে থাকেন। তবে ভোটারদের মাঝে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানোর মত কোন ঘটনা হচ্ছেনা। আবার কোন কোন সমর্থককে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে শোনা গেছে। কেউ কেউ আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রার্থীর বিরুদ্ধে উস্কানীমূলক স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।


আরএক্স/