সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ মৌসুম শুরু
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৫৩ অপরাহ্ন, ২৮শে জানুয়ারী ২০২৪
শীতের তীব্রতা বেশি থাকলেও সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েই গোলপাতা সংগ্রহের জন্য বনে যাচ্ছে মোংলার দক্ষিণ চরের বাসিন্দা বাওয়ালি মোজাম্মেল হাওলাদার। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরেই সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) বনবিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গোলপাতা আহরণে জন্য বনের অভ্যন্তরে যাচ্ছে বাওয়ালীরা। এ মৌসুম চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: মোরেলগঞ্জে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করলেন দম্পতি
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) স্টেশন অফিসার শেখ মো. আনিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রবিবার (২৮ জানুয়ারি) থেকে গোলপাতা আহরণকারী বাওয়ালীদের অনুমতিপত্র দেওয়া হচ্ছে। এরপর উপকূলের বাওয়ালীরা বনের ভেতরে গোলপাতা আহরণে জন্য রওনা করছে।
মোংলার জয়মনি এলাকার বাওয়ালিরা বলেন, প্রতিবছর গোলপাতা আহরণের আগে নৌকা মেরামত করা লাগে। গোলপাতা আগের মত এখন আর চলে না। ভালো দামও পাওয়া যায় না। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতেও কষ্ট হয়। গোলপাতা আহরণের নৌকাগুলি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার না হওয়ার কারণে গোলপাতার মৌসুম শেষ হলে নৌকাগুলি নদীর চরে ফেলে রাখতে হয়।
মোংলার গোলপাতা ব্যবসায়ী লিটন বলেন, বর্তমানে গোলপাতা মানুষের কাছে আগের মতো চাহিদা না থাকায় বিক্রি কমে গেছে। যার কারণে অনেকের আড়তে গতবারের পুরনো গোলপাতা এখনো রয়ে গেছে ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) স্টেশন অফিসার শেখ মো. আনিসুর রহমান বলেন, সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে দুটি গোলপাতার কূপ রয়েছে। একটি হলো শ্যালা গোলপাতা কূপ অপরটি চাঁদপাই গোলপাতা কূপ। বাওয়ালিরা সুন্দরবনে যাতে নির্বিঘ্নে গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য বনবিভাগ থেকে যেমন নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা তেমনি এ গোলপাতা আহরণে রয়েছে শর্তও। গোলপাতা আহরণের সময় বনের অন্য কোনো ধরনের গাছপালা কাটা যাবে না। কোনো বাওয়ালী যদি গোলপাতার পাশাপাশি অন্য প্রজাতির গাছ কাটেন কিংবা বনের ক্ষতি করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২৪ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরো জানান, ২৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া গোলপাতা আহরণ মৌসুম চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এ মৌসুমে শ্যালা ও চাঁদপাই কূপ থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টন গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
এবার মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে ভ্যাট ব্যতিত রাজস্ব নেওয়া হচ্ছে ৬০টাকা। তবে দিনদিন গোলপাতার ব্যবহার কমে আসায় কূপ থেকে গোলপাতা আহরণের পরিমাণ কমে আসছে। আগে যেখানে ১৫০-২০০ নৌকা হতো সে তুলনায় এবার প্রচুর কম নৌকা গোলপাতা আহরণে যাচ্ছে। নৌকার সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাওয়ালীর সংখ্যাও কমে গেছে। এবারও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম গোলপাতা আহরণ হবে বলেও জানান বনবিভাগের এ কর্মকর্তা।
আরএক্স/