সেনা সমর্থনও জেতাতে পারলো না নওয়াজ শরীফকে!!


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০১:১৩ অপরাহ্ন, ৯ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪


সেনা সমর্থনও জেতাতে পারলো না নওয়াজ শরীফকে!!
নওয়াজ শরিফ | ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকেই ছিল বিভিন্ন বিতর্ক। নির্বাচনের পূর্বে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারাগারে প্রেরণ এবং তার দল তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) দলীয় প্রতীক বাতিল হওয়ার পর বিশ্লেষকরা মতামত প্রকাশ করেছিলেন, সেনা সমর্থনের জোরে নওয়াজ শরিফ ও তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগই (পিএমএল-এন) জিতবে এবারের নির্বাচনে। কিন্তু, ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর পাল্টে গেল সব ধরনের হিসাব-নিকাশ।


ইমরানের পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্ররা বেশির ভাগ আসনে এগিয়ে আছেন। এরই মধ্যেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর নিকঠে নওয়াজ শরিফের হেরে যাওয়ার খবর। সেনা সমর্থন পেয়েও ইমরান খানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) ঠেকাতে সর্বাত্বক চেষ্টা করেও খাবি খাচ্ছে নওয়াজের পিএমএল-এন।


আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা


শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানি গণমাধ্যম সামা টিভি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের (৮ ফেব্রুয়ারি) সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর সব্বোর্চ নেতা নওয়াজ শরিফ মানসেহরাতে (নির্বাচনী এলাকা এনএ-১৫) স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা গাস্তাসাপের নিকটে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে হেরে গেছেন। শাহজাদা গাস্তাসাপ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী বলে জানা গেছে।


এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি নির্বাচনী এলাকা এনএ-১৫ মানসেহরা থেকে পাওয়া অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা গাস্তাসাপ ৭৪ হাজার ৭১৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ পেয়েছেন ৬৩ হাজার ৫৪ ভোট। নওয়াজ শরিফের জন্য এটিকে বেশ বড় ধরনের পরাজয় বলেই গণ্য করা হচ্ছে। যদিও অন্য আরও একটি আসনে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।


আরও পড়ুন: অনৈসলামিক বিয়ের দায়ে ইমরান-বুশরার সাত বছরের কারাদণ্ড


সামা টিভি জানিয়েছে, অপ্রত্যাশিত এই ফলাফল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর সাধারন নির্বাচনী দৃশ্যপটে একটি বড় বিপর্যয় হিসেবে ধরা হচ্ছে।


এদিকে ভোট গ্রহণের দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল প্রকাশ করেনি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) অভিযোগ করেছেন, এই দলটির সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী হতে দেখে বিলম্ব করা হচ্ছে ফল ঘোষণায়। নির্বাচনী পর্যবেক্ষদের মতে, অতীতের নির্বাচনগুলোর বিবেচনায় এবারের ফল ঘোষণায় এতটা বিলম্ব হওয়া ‘অস্বাভাবিক’ ।


পিটিআই অভিযোগ করেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী হতে দেখে নির্বাচনের ফল ঘোষণায় দেরী করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনের যে পর্দায় ফলাফল দেখানো হচ্ছিল তা-ও বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন দলটির নেত্রীবৃন্দরা।


আরও পড়ড়ুন: পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে দিন জোড়া বিস্ফোরণ, নিহত ২৬


কারাদণ্ড প্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা বলছে, ফল প্রকাশে বিলম্বের কারণ ভোট কারচুপির বিশেষ লক্ষণ। ষড়যন্ত্র করে জনসাধারণের রায় বদলে ফেলার অপচেষ্টার পরিণাম খুব ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারিও করেছে পিটিআই।


এ ছাড়া স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত এখন পর্যন্ত পাওয়া অনানুষ্ঠানিক ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, দেশটির বিভিন্ন এলাকায় ভোটে এগিয়ে আছেন পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এদিকে, ফলাফল বিলম্বের জন্য পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের বিশেষ সচিব জাফর ইকবাল ‘ইন্টারনেট সমস্যাকে’ দায়ী করেছেন। তিনি একটি নির্বাচনী এলাকার আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করার সময় এই দাবি করেন।


এমএল/