ঘুমধুম সীমান্তে অবিস্ফোরিত ‘রকেট লঞ্চার’ আতংক

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্তের নাফনদীর ওপারে শুক্রবার সারাদিন ও রাতে কোন গোলাগুলি শব্দ শুনা যায়নি। তবে শনিবার ভোরে আবার শুনা গেছে গুলি ও মর্টার শেলের বিকট আওয়াজ। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শুনা গিয়েছিল।

এর মধ্যে ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে নতুন করে কোন গোলাগুলি শব্দ শুনা না গেলেও সীমান্তের এপারে তৈরি হয়েছে অবিস্ফোরিত ‘রকেট লঞ্চার’ আতংক। যেখানে শনিবার সকালেও অবিস্ফোরিত ২ টি রকেট লঞ্চার পাওয়া গেছে।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানিয়েছেন, শনিবার ভোরে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কানজর পাড়া সীমান্তের নাফনদীর ওপারে গুলি বর্ষণ, মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনা গেছে। যতদূর জানা গেছে শনিবার ভোরে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কুমিরখালী এলাকায় সংঘর্ষে গুলি বর্ষণ ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। এতে সীমান্তে এপারের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং এলাকায় কয়েকটি গুলিও এসে পড়েছে।

আরও পড়ুন: নাফনদী দিয়ে ২ রোহিঙ্গা নারীকে অনুপ্রবেশ করতে দেয়নি বিজিবি

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শুনা গেছে। শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত এটা বন্ধ ছিল। শনিবার ভোরে পর পর শব্দ শুনা গেছে। এখন বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি শব্দ শুনা যাচ্ছে।

তবে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত ওপারে নতুন করে কোন গোলাগুলির শব্দ শুনা যায়নি। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এপারে গুলি এসে পড়েছিল বলে জানিয়েছেন ঘুমধুমের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ।

তিনি জানান, এ পরিস্থিতিতে ঘুমধুম সীমান্তে একের পর এক অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার সকালেও নতুন করে ২ টি অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার পাওয়া গেছে। যা লাল পতাকা দিয়ে ঘীরে রেখেছে বিজিবি। এর আগে আরও ২ টা রকেট লঞ্চার পাওয়া গিয়েছিল। যা পরে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ঘুমধুম থেকে ১০০জন বিজিপি সদস্যকে টেকনাফে স্থানান্তর

তিনি বলেন, বান্দরবানের ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে বাংলাদেশের ভূ-খন্ডের ক্ষেত-খামার, কৃষি জমিতে মিলছে মিয়ানমার ছোঁড়া এসব রকেট লঞ্চার। অবিস্ফোরিত এসব গোলা নিয়ে খেলা করছে সীমান্তের বাসিন্দা ও শিশুরা। ফলে আতংক তৈরি হয়েছে।

শনিবার সকালে কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে রকেট লঞ্চালের গোলা পাওয়া রাজিয়া বলেন, কৃষি জমিতে কাজ করছিলাম। তখন দেখি শিশুরা লম্বা লোহার রড়ের মতো একটি জিনিস নিয়ে খেলছে। তখন তাদের কাছ থেকে এটি নিয়ে বাসা চলে আসি। পরে স্বামী বলে এটি অস্ত্র। তার পরপরই বিজিবিকে এটি হস্তান্তর করি।

আরও পড়ুন: অনুপ্রবেশকালে ২ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠালো বিজিবি

সীমান্তের বাসিন্দা আব্দু রশিদ বলেন, গোলাগুলো কত মারাত্মক তা কেউ জানে না। মূলত এটা যে বিস্ফোরক তাও জানে না সীমান্তের অনেক বাসিন্দা ও শিশুরা।

যদিও মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গোলা ও গুলিতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশি এক নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছে অন্তত ৮ জন।

এদিকে উখিয়ার পালংখালীর পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী।

এমএল/