সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেবে মিয়ানমারের সরকার


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১০:০৮ অপরাহ্ন, ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪


সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেবে মিয়ানমারের সরকার
ফাইল ছবি।

মিয়ানমারে আরাকান আর্মির (এএ) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সামরিক জান্তা সরকার।


শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।


রাখাইনের অধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, জান্তা বাহিনী জানিয়েছে, যেসব রোহিঙ্গা পুরুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন তাদের এক বস্তা চাউল, নাগরিকত্বের একটি পরিচয়পত্র এবং মাসিক ১ লাখ ১৫ হাজার কিয়াট বেতন দেওয়া হবে। যা বাংলাদেশি অর্থে সাড়ে চার হাজার টাকার সমান।


আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সংঘাত: তিন রাত গুলির শব্দ আসেনি, শান্ত টেকনাফ সীমান্ত


রোহিঙ্গাদের প্রলুব্ধ করতে না পেরে এখন জোরপূর্বক তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের রাজধানী সিত্তেতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং সেখানে দুই সপ্তাহের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।


রোহিঙ্গাদের ধরে নিয়ে যেতে বিভিন্ন গ্রাম এবং শরণার্থী ক্যাম্পে হানা দিচ্ছে জান্তা বাহিনী। গ্রামবাসী ও অন্যদের আশঙ্কা তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।


এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা পুরুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।


ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান বলেছেন, “প্রশিক্ষণের সময় মাত্র দুই সপ্তাহ। যাদের দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাদের জান্তা বাহিনী শুধুমাত্র মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।”


এরমধ্যে সিত্তের এবং বুচিডংয়ের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৪০০ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকলের তালিকা তৈরির জন্য-বুচিডং, মংডু এবং সিত্তের গ্রাম প্রশাসক ও নেতাদের চাপ দিয়েছে।


এরমধ্যে ছোট গ্রাম থেকে অন্তত ৫০ জন, বড় গ্রাম ও প্রতিটি শরণার্থী ক্যাম্প থেকে অন্তত ১০০ জনের তালিকা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান আরও বলেছেন, “আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি বুধবার পর্যন্ত সিত্তের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে ৩০০ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তারা এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।”


এর আগে বুচিডং থেকে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি শতাধিক মুসলিম রোহিঙ্গা পুরুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।


আরও পড়ুন: নাফনদী দিয়ে ২ রোহিঙ্গা নারীকে অনুপ্রবেশ করতে দেয়নি বিজিবি


রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, যাদের জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে; তাদের জন্য তারা সবাই চিন্তিত। তারা আরও চিন্তিত কারণ, যে কোনো সময় তাদেরকেও প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।


এদিকে গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। তাদের হামলায় অনেক ঘাঁটি ও ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গেছে জান্তা সেনারা। এখন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রোহিঙ্গাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।


আরএক্স/