কুষ্টিয়ায় তুলা চাষের আগ্রহ বাড়ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, ২৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪
তৈরি পোশাক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাচামাল তুলা। দেশের সবচেয়ে বেশি তুলা উৎপাদন হয় এ জেলায়। কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় জেলার দৌলতপুর উপজেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তুলা চাষ। এ জেলার সিংহভাগ তুলা উৎপাদন হয় দৌলতপুর উপজেলায়।
কুষ্টিয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের এ দৌলতপুর উপজেলায় ৭টি ইউনিটে মোট ১৫০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। প্রকারভেদে প্রতি মন তুলা ৩ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকা বিক্রয় হয়েছে।
এ বছর দৌলতপুর উপজেলায় ৬ হাজার ৯১০ জন তুলাচাষি ২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করছে। বিঘা প্রতি ১৩ মন তুলার ফলন ধরা হয়েছে। তুলার নির্ধারিত দাম আনুমানিক উৎপাদণ হিসাব করলে দৌলতপুর উপজেলায় ৭০ কোটি টাকার অধিক তুলা বিক্রয় হবে।
জানা যায়, তুলার বীজ থেকে তৈরি হয় স্বাস্থ্যকর ভোজ্যতেল ও খৈল। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে ভারসাম্য রেখে এ জেলায় উৎপাদিত তুলার দাম নির্ধারণ করে মিল মালিকরা।
আরও পড়ুন: সয়াবিনের বিকল্পে সুর্যমূখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে শ্রীনগরের কৃষকদের
দৌলতপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় তুলার হাট বসে প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদে। এখানে তুলা ক্রয় করতে আসেন বিভিন্ন সুতা প্রস্তুতকারী মিল মালিকরা। আল মদিনা ইন্ডাস্ট্রির মালিক গোলাম সাব্বির জানান, ৩০ বছর যাবৎ প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের হাট থেকে তুলা ক্রয় করেছেন তারা। এখানকার তুলা দিয়ে সুতা ও তুলা বীজ দিয়ে ভোজ্যতেল ও খৈল প্রস্তুত করেন।
উপজেলার বিলগাতুয়া এলাকার তুলা চাষি সাহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর টানা বৃষ্টির কারণে তুলার ফলন কম হয়েছে। বাজারে সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তুলা চাষে ব্যয় বেড়েছে। তুলার বাজার দর সরকার ঠিক করলে চাষিরা লাভবান হবে।
আরও পড়ুন: পলাশবাড়ীতে পলি মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ
তুলা বীজ থেকে ১৫-২০ শতাংশ উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ তেল পাওয়া যায় যা সয়াবিন তেলের চেয়েও পুষ্টিকর। আমাদের দেশে ভোজ্য তেলের সমস্যায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তুলার বীজ থেকে ২৪ শতাংশ প্রোটিন ও ২০ শতাংশ ফ্যাটযুক্ত খৈল পাওয়া যায়। যা পশুখাদ্য ও মৎস্য খাদ্যের জন্য উৎকৃষ্ট।
মাহাবুব হোসেন নামের আরও এক তুলা চাষি জানান, এ বছর ফলন ভালো না হওয়ায় খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নয় মাস সময় লাগে তুলা ঘরে তুলতে।
পার্বত চট্টগ্রাম ও পাহাড়ি এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তুলা চাষ হয়। দেশের যে সকল এলাকায় বৃষ্টি কম হয় সে সমস্ত অঞ্চলে শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে তুলার বীজ বপন করতে হয়।
কুষ্টিয়ার প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ আল মামুন বলেন, গত মৌসুমের চেয়ে এ বছর তুলার চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ড তুলা চাষিদের তুলা চাষে আগ্রহ বাড়াতে পরামর্শ দিচ্ছি। আগামী মৌসুমে চাষিদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করব। চাষিদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
জেবি/এসবি