তাইজুলের লড়াকু ইনিংসের পরও দুইশ’র আগেই অলআউট বাংলাদেশ


Janobani

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৫৭ অপরাহ্ন, ২৩শে মার্চ ২০২৪


তাইজুলের লড়াকু ইনিংসের পরও দুইশ’র আগেই অলআউট বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

মূল ব্যাটারদের কেউই রান পাননি। দলের মান বাঁচানোর দায়িত্বটা তাই বোলাররাই কাঁধে তুলে নিলেন। নাইটওয়াচম্যান স্পিনার তাইজুল ইসলাম যেন দেখালেন টেস্ট ম্যাচে ক্রিজে কীভাবে টিকে থাকতে হয়। আর শেষে এসে পেসার খালেদ আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম দলের মান বাঁচিয়েছেন ব্যাট হাতে নিয়ে। সিলেটের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে একসময় শঙ্কা ছিল দেড়শ স্কোর পেরুনো নিয়ে। সেখানে সেই স্কোর দুইশ এর কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়িয়েছে। 


টপঅর্ডার এবং মিডলঅর্ডারের সবাই যখন ব্যর্থতায় মোড়া, তখন লিডের আশা করাও যেন একধরনের বোকামি। টাইগাররা লিড পায়নি। তবে খুব কাছাকাছিও যাওয়া হয়নি তাদের। টাইগারদের ইনিংস শেষ হয়েছে মাত্র ১৮৮ রানে। প্রথম ইনিংস শেষে লঙ্কানদের লিড দাঁড়িয়েছে ৯২ রানের। 


দিনের শুরু থেকেই নাকি বাকি দিনগুলো নিয়ে আভাস পাওয়া যায়। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের শুরুটাই ভীষণ নড়বড়ে হয়েছে। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ৯ রান এবং তাইজুল ০ রান নিয়ে দিন শুরু করেন। দুজন মিলে ২১ রান যোগ করতেই দিনের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। জয় নিজের রানের সাথে আর মাত্র ৩ রান যোগ করেই সাঝঘরে ফিরেছেন।


আরও পড়ুন: প্রথম দিন শেষে ৩২ রানেই ৩ উইকেট নেই বাংলাদেশের 


আগেরদিন সেকেন্ড স্লিপে দাঁড়িয়ে ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিসের ক্যাচ ছেড়েছিলেন। আর এদিন নিজেই ক্যাচ দিয়েছেন সেকেন্ড স্লিপে। মাত্র ১২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হলো তাকে। এরপর ক্রিজে এসেছিলেন শাহাদাত হোসেন দীপু। তাইজুলের সাথে জুটি জমেছিল কিছুটা। ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দুজনেই রয়েসয়ে খেলতে চেয়েছেন।


দুজনের এই জুটি যখনই আশা দেখাচ্ছিল, তখনই আক্রমণ করেন লাহিরু কুমারা। আর তাতেই সাফল্য পায় সফরকারীরা। বাড়তি বাউন্সের বলটা বুঝে ওঠার আগেই দীপুর ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা লুফে নেন দিনের দ্বিতীয় ক্যাচ। ৮৩ রানে বাংলাদেশ হারায় ৫ম উইকেট। ব্যক্তিগত ১৮ রানে সাজঘরে ফেরেন ব্যাটার দীপু। 


তাইজুলকে যোগ্যসঙ্গ দিতে এরপর ক্রিজে এসেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার লিটন কুমার দাস। দুজনে মিলে পার করেছেন বাংলাদেশের দলীয় শতরান। লিটন একেবারেই টেস্ট মেজাজে খেলছেন। আর টেলএন্ডার হয়েও উইকেট আগলে রেখেছেন তাইজুল ইসলাম। কিন্তু টাইগারদের এই জুটিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। লাহিরু কুমারার দুর্দান্ত ইনসুইং লিটনের প্রতিরোধ ভেঙে দেয়। দলীয় ১২৪ এবং ব্যক্তিগত ২৫ রানে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন লিটন। 


আরও পড়ুন: খালেদ-রানার দাপুটে বোলিংয়ে ২৮০ রানেই অলআউট লঙ্কানরা


শেষমেষ আশা ছিলেন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু যেখানে সবাই ব্যর্থ, মিরাজ কেনইবা ব্যতিক্রম হবেন! পুরো ইনিংসের নিয়ম মেনে এই অলরাউন্ডারও ফিরেছেন হতাশা নিয়েই। ৩৪ বলে ১১ রান করে কাসুন রাজিথার বলে আউট হন এই ব্যাটার। দলের প্রয়োজনের সময় অহেতুক বড় শট খেলতে গিয়ে নিজের উইকেট খুইয়েছেন। তার একটু আগেই অবশ্য তাইজুল ফিরে গিয়েছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে। ৪৭ রানের ওই ইনিংসটাই বাংলাদেশের মান বাঁচিয়েছে। সেইসাথে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি না পাওয়ার আক্ষেপও মিশে ছিল তার চোখে মুখে।


মান বাঁচানোর কাজ করেছেন পেসার খালেদ এবং শরিফুল। শরিফুল স্বভাব অনুযায়ী বড় বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন। দুই ছক্কায় ১৫ রান করেছেন। দলের স্কোর তাতে আরও কিছুটা বেড়েছে। আর সিলেটের লোকাল বয় খালেদ আহামেদ করেছেন ২২ রান। তাতেই টাইগারদের ইনিংস গিয়ে ঠেকলো ১৮৮ পর্যন্ত। এদিন লঙ্কানদের হয়ে চার উইকেট পেয়েছেন বিশ্ব ফার্নান্দো। ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন কাসুন রাজিথা এবং লাহিরু কুমারা।  


এমএল/