দেশের উন্নয়ন ও শান্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, ১৬ই এপ্রিল ২০২৪


দেশের উন্নয়ন ও শান্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
ছবি: জনবাণী

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, দেশের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরের জন্য আমাদের শপথ হবে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে যেন আমরা প্রত্যেকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য আলাদা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থাকার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে এরকম অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।”


মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাঙ্গামাটি মারি স্টেডিয়াম মাঠে মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) আয়োজিত মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসবের জলকেলি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এসব কথা বলেন।


আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শিশুদের জন্য শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী


জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার। এ অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়েশা খান এমপি।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি আরও বলেন, “বৈসাবি একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, বৈসাবী উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামে নতুন না। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই উৎসব। এটা শুধু সাংস্কৃতিক উৎসবই নয়। এটাতে ধর্মীয় অনুভুতিও জড়িত। এদিন মুরব্বীদের কাছ থেকে আশির্বাদ চাওয়া হয়। তাই এটি সামাজিক সাংস্কৃতিক উৎসবের পাশাপাশি ধর্মীয় উৎসবও।”


আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী দেশকে সৌহার্দ্র ও সম্প্রীতির বন্ধনে আগলে রেখেছেন: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী


তিনি আরো বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল সকল ভাষাভাষী ও সকল ধর্মের লোক সম্প্রীতির ঐক্যের বন্ধনে একই ছাতার নিচে বসবাস করবেন। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরন্তর কাজ করে চলেছেন- লক্ষ্য একটাই- বাংলাদেশের জাতি, সকল ভাষাভাষি গোষ্ঠী, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে যেন ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি হয়। আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।”


প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা আরও বলেন, “রাঙ্গামাটিতে আজকের এই জল উৎসব অনুষ্ঠান প্রমান করে আমরা শান্তি চাই সম্প্রীতি চাই ঐক্য চাই।” তাই দেশের কল্যাণে যা যা করার প্রয়োজন সবাই স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানান তিনি। পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল স্রোতধারার সাথে সামিল করার ক্ষেত্রে সকলকে অনন্য ভূমিকা রাখার প্রতিও আহ্বান জানান পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।


সাংগ্রাই উৎসবের শুরুতেই প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা মারমা যুবক যুবতিদের গায়ে পানি ছিটিয়ে জলকেলির শুভ সুচনা করেন। জলকেলির পর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মারমা শিল্পিদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।


রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) সভাপতি অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা সাংসদ জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী’র সহধর্মিনী প্রধানশিক্ষক মিজ মল্লিকা ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার সোহেল আহমেদ, বিজিবি রাঙ্গামাটি সদর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ আনোয়ার লতিফ খান, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, বিপিএম (বার), রাঙ্গামাটি সদর পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, দুদক রাঙ্গামাটির উপ-পরিচালক জাহিদ কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়েশা খান বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহি উৎসব সাংগ্রাইয়ের সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধ ও স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে পাহাড়ে সবাই যেন ভালো থাকে।


জল উৎসব উদ্বোধন করতে গিয়ে রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদা বলেন, সাংগ্রাই উৎসব শুধু মারমা সম্প্রদায়ের নয় এই উৎসব সকলের। এ উৎসব এ এলাকায় বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

 

মারমারা পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সাংগ্রাই-এর এই জল উৎসব করে থাকে। মারমা তরুণ-তরুণীরা এই জলকেলি উৎসবের মাধ্যমে একে অপরকে পানি ছিটিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি, দুঃখ, অপশক্তিকে দূর করে ধুয়ে মুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়।


জেবি/এসবি